ছবি : বসির আহাম্মেদ
ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার পবহাটি গ্রামের শিক্ষিত যুবক সোহেল রানা পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
আব্দুল খালেক ও আলেয়া বেগম দম্পতির ৫ সন্তানের মধ্যে সবার বড় সোহেল রানা। পিতার ৮ শতক জমির উপর বসতবাড়ি ছাড়া কিছুই ছিলো না তাদের। শহরের পবহাটি সিটি মোড়ে একটি মুদি দোকান আছে তাদের। তা থেকে যা আয় হতো তা দিয়ে ৭ সদস্যর সংসার চালাতে হিমশিত খেতে হতো পিতা আব্দুল খালেকের।
অভাবের সংসারে ২০০৮ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে সোহেল রানা। চরম অভাব অনটনের মধ্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে বিএসএস কোর্স ও ২০১৮ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ কোর্স সম্পন্ন করে।
সংসারে পিতাকে সহযোহিতা করতে লেখাপড়ার মাঝেই ২০১২ সালে গ্রামের মাঠে ১০০ শতক জমি নিয়ে শুরু করেন পেঁপে চাষ। ৬ মাসের মধ্যে পেতে শুরু করেন সফলতা। পিতার সহযোগিতায় যুবক সোহেল রানা ঝুঁকে পড়েন পেঁপে চাষে। ৩ বছরে ভালো ফলন পান তিনি। কিন্তু টাকার জন্য আবাদ বৃদ্ধি করতে পারছিলেন না । ২০১৫ সালে কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পুরোদমে শুরু করে পেঁপের আবাদ। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। কয়েক বছরে ভালো লাভ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি ৭৫০ শতক জমিতে পেঁপের আবাদ করছেন।
তার জমিতে উৎপাদিত পেঁপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন কাচাবাজারে পাঠান তিনি। আবাদ করে যা লাভ হয়েছে তা দিয়ে বাড়িকরেছেন।বোনদের বিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি স্বাবলম্বী। বর্তমানে প্রতিবছর তিনি ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেন।
যুবক সোহেল রানা বলেন, আমি এক সময় খুবই কষ্ট করেছি। অভাবের সংসারে ভালোমত লেখাপড়াও করতে পারিনি। তারপরও অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শেষ করেছি। এর মাঝেই পেঁপের আবাদ করি। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আজ আমি পেঁপে চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। শুধু চাকুরির পিছনে না ঘুরে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে চাষাবাদ করলেও ভাগ্য ফেরানো সম্ভব।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম বলেন, যুবক সোহেল রানা বিভিন্ন জাতের পেঁপে আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাকে বিভিন্নভাবে আমরা সহযোগিতা করেছি। আগামীতেও যদি কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে তা করা হবে।