ছবি: বাংলাবার্তা
ঢাকা: নভেম্বরে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসছে বেসরকারি আরও একটি এয়ারলাইন্স ‘ফ্লাই ঢাকা’ এয়ারলাইন্স। সাশ্রয়ী মুল্যে নিরাপদ ভ্রমনকে গুরত্ব দিয়ে ইতোমধ্যে এয়ারক্রাফট নিশ্চিত করনসহ এওসি সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এয়ারলাইন্সটি।
জানা যায়, চলতি বছরে বাংলাদেশের আকাশে ডানা মেলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে খুব দ্রুত লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এই বেসরকারি এয়ারলাইন্সটি।
এই প্রসঙ্গে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্সের সিইও লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর পিএইচডি, এনডিসি, পিএসসি (অব:) বাংলাবার্তাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বিশ্বের একটি অন্যতম প্রধান এভিয়েশন হাব করার যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, সেই লক্ষ্য অর্জন এবং বাংলাদেশ এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাবে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স। শুধু আভ্যন্তরীণ বাজার নয় বরং বিশ্ব বাজারেও শক্ত ভীত গড়তে চায় ফ্লাই ঢাকা এয়ার লাইন্স। সেই লক্ষ্য কে সামনে রেখে এশিয়ার একটি জায়ান্ট এয়ায়রলাইন্সের সাথে ইতিমধ্যে সমঝোতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। “Connecting Dreams, Uniting Destinations”-এই স্বপ্ন কে সামনে রেখে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্সটির কর্মীরা।
জানা যায়, বিমানযাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। গত বছর রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার করেছে। তবে এই যাত্রীদের বেশিরভাগই ব্যবহার করছে বিদেশি এয়ারলাইন্স।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার করেছে ১ কোটি ৭৪ লাখ যাত্রী। তাদের বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী। সংখ্যাটি ২০২২ সালের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশি এবং বিদেশি উভয় নাগরিকের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক যাত্রীর সংখ্যা গত বছরে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৬ লাখ বেড়েছে। কোভিড মহামারির আগের সময়ের তুলনায় বেড়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ।
যাত্রী বাড়ার কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে রেকর্ড জনশক্তি রপ্তানি, শিক্ষাগত অভিবাসন বৃদ্ধি, চিকিৎসা ও পর্যটন এবং ব্যবসায়িক ভ্রমণ। কোভিড মহামারির পর বিশ্বেই বিমানযাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী বিমান ব্যবহারকারী যাত্রী প্রায় ৩৬ শতাংশ বেড়েছে।
বিমানযাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সুযোগটি ফ্লাই ঢাকা নিতে চায় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স প্রধান ফারাবি বিন জহির।
তিনি বাংলাবার্তাকে বলেন, “কোভিডের পর থেকে আমাদের এয়ারপোর্টে ট্রাফিক বেড়েছে। প্রতিবছরই যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, যাত্রীদের ম্যাক্সিমাম ক্যাপাসিটি ব্যবহার করছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। প্রায় ৮০ শতাংশ মার্কেট তাদের দখলে।
“আমাদের দেশের টাকাগুলো বিদেশে চলে যাচ্ছে। সেটাকে মাথায় রেখেই আমাদের আসা। আমরা মার্কেটের এই গ্যাপ দূর করতে চাই।”
যাত্রীদের আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “অনেক জায়গায় দেখবেন, বিজনেস ক্লাস এবং ইকোনমিক ক্লাসের যাত্রীদের সঙ্গে আচরণে ব্যাপক ফারাক থাকে। আমরা এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে চাই। আমরা সকল যাত্রীর জন্য তার যাত্রা সমান আরামদায়ক করতে চাই।”
ফারাবি বলেন, “কিন্তু এই রেমিটেন্স যোদ্ধাদের সাথে নানান রকম ঘটনা প্রায়ই ঘটে। আমরা তাদের জন্যও ভ্রমণ আরামদায়ক করতে চাই। তাদের জন্য আমরা বিশেষ সুবিধা রাখব।”
দেশে অধিকাংশ বেসরকারি এয়ারলাইন্সের টিকতে না পারার বিষয়ে ফারাবি তখন ও এখনকার যাত্রী সংখ্যার তুলনা দেন। একটা সময় ছিল, যখন শুধু উচ্চবিত্তরা বিমান ব্যবহার করত। ফলে এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রী পেত কম।কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে। মানুষের কাছে সময় কম। রাস্তায় সময় অনেক লাগে, যানজটসহ নানান ঝামেলা হয়। ফলে মানুষ এখন ধীরে ধীরে আকাশ পথকে বেছে নিচ্ছে। এখন মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত এই শ্রেণির লোকজনও প্লেনে চলছে।
অভ্যন্তরীণ রুটে এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা ফ্লাই ঢাকার। পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে, তখন এয়ারবাস কিংবা বোয়িং উড়োজাহাজ বহরে সংযোজন করবে তারা।
বাংলাবার্তা/এসজে