নিজ বাগানে শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান। ছবি: মো. মনোয়ার হোসেন
মহম্মদপুর (মাগুরা): থোকায় থোকায় শুধু লিচু আর লিচু। লাল টকটকে ও টসটসে লিচুর ভারে ডাল নুয়ে পড়েছে মাটি পর্যন্ত। মাটি ছুঁয়েছে লিচুর থোকা। মধুমতি নদীপাড়ে নির্মল পরিবেশে লিচুতে ঠাসা এই বাগানটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসেন প্রতিদিন।
লিচু বাগান করে সফলতার মধ্যদিয়ে লাভবান ও লাখপিত হয়েছেন মাগুরার মহম্মদপুরের বসুরধুলজুড়ী গ্রামের মো. জিয়াউর রহমান নামে এক শিক্ষক। সফল এই শিক্ষক ওই গ্রামের মৃত. আব্দুস সালামের ছেলে এবং স্থানীয় বসুরধুলজুড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।
২০১৪ সালের কথা। সহকারী শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান নিজ উদ্যোগে বাড়ির অদূরে মধুমতি নদীর তীরে এক একর জায়গাজুড়ে লিচু বাগান গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার লিচুর গ্রামখ্যাত হাজরাপুর থেকে ‘হাজরাপুরি’ জাতের ৩৪টি লিচুর কলম চারা ক্রয় করে নিয়ে আসেন। এরপর শ্রমিক নিয়োগ করে চারাগুলো রোপণ করেন। বছর দুয়েক পর থেকেই অল্প পরিমাণ লিচু ধরতে শুরু করে।
২০২০ সালে ব্যাপকহারে লিচু ধরে। প্রতি বছরই লিচুর ফলন বাড়ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে বিপুল পরিমাণ লিচু ধরেছে। রিষ্টপুষ্ট, টসটসে রসাল. মাংসল এবং নজরকাড়া রঙের লিচুতে গাছগুলো ঠাঁসা। লিচুর ভারে ডালগুলো নুয়ে পড়েছে। কিছু কিছু ডাল লিচুসহ মাটিতে গিয়ে ঠেঁকেছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের এই চমৎকার লিচু বাগান দেখতে মানুষ আসছেন। অনেক বেকার যুবক লিচু বাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধও হচ্ছেন এই বাগান দেখে।
২০২০ থেকে ২০২৩ অথ্যাৎ চলতি মৌসুম পর্যন্ত এই ৪ বছরে সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান কয়েক লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে তিনি পাইকারদের কাছে বাগানের সব লিচু এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।
সহকারী শিক্ষক ও বাগান মালিক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘নিজ প্রচেষ্টায় শখের বশে লিচু বাগান করেছি। ছোট-বড় সবার কাছেই রসাল ফল লিচু খুবই প্রিয়। এটির ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। শখ থেকে এ বাগান করে আমি বেশ লাভবানও হচ্ছি।’