ছবি: সংগৃহীত
বগুড়ার স্বনামধন্য সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির লটারিতে সুবিধা পেতে প্রাপ্তি সরকার নামে এক শিক্ষার্থীর নামে ১৫৬টি আবেদন পড়েছে। এছাড়া কয়েকজন ১২৪, ১১২, ৭৭, ৩০ ও ৪০টি করে আবেদন করে।
জন্ম সনদ, নাম, ছবি জালিয়াতির মাধ্যমে এসব আবেদন করা হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব রাবেয়া খাতুন এ তথ্য দিয়েছেন।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, প্রভাতী শাখায় ৩৩ জন এক হাজার ৪০৫টি আবেদন করে। আর দিবা শাখায় ৩৫ জন আবেদন করেছে এক হাজার ১২০টি। এসব অসঙ্গতির কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কর্তৃপক্ষ একাধিক আবেদনকারীর ভর্তি না করতে নির্দেশনা দিয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০৬ আসনের মধ্যে ভর্তি করা হয়েছে ৯১ জনকে। বাতিল করা হয়েছে ৮৩ জনের ভর্তি। মাউশির নির্দেশে অবশিষ্ট আসনে শিগগিরই ভর্তি করা হবে।
প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য গত ১৬ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা হয়। এরপর ১২ ডিসেম্বর মাউশির তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে লটারি অনুষ্ঠিত হয়। ওই রাতে ইন্টারনেটে ফলাফল পাওয়ার পর এক শিক্ষার্থীর ১৫৬ বারসহ অনেকের দুই থেকে ১২৪ বার আবেদন করার তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি চেষ্টাকারীদের আবেদন বাতিল হওয়ায় সব আসন পূর্ণ হচ্ছে না। তাই অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি করা হবে। বুধবার অভিভাবকরা এসে জটলা ও হৈ চৈ করেন। তারা একাধিক আবেদনের জন্য দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদের সন্তানদের ভর্তির দাবি জানান। এজন্য তারা ভর্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের দায়ী করেন। পরে তাদের এ ব্যাপারে মাউশি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বগুড়া জিলা স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অন্তত ১৪০ জনের একাধিকবার আবেদন জমা পড়ে। অভিভাবকদের এহেন আচরণে গত কয়েক দিন ধরে জেলার সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সাধারণ অভিভাবকরা এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের শুধু ভর্তি বাতিল নয়; অভিভাবকদের আইনের আওতায় নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ছাত্রদের নাম বাদ পড়ায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে অভিভাবকরা স্কুলে এসে হাঙ্গামা করেন। তারা শিক্ষকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদের হাতে দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও প্রভাতী শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ার ইসলাম হেনস্তার শিকার হন।
প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মোস্তাফী জানান, লটারিতে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মাউশির পরামর্শে তার প্রতিষ্ঠান থেকে বুধবার পর্যন্ত ৫৭ জনের আবেদন বাতিল করা হয়। এ কারণে বুধবার সকালের দিকে কয়েকজন অভিভাবক এসে হট্টগোল করেন। পরে তাদের মাউশির কাছে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।