ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করছেন এক কৃষক
যান্ত্রিকতার যুগে গ্রামের মাঠে গরু দিয়ে হালচাষ এখন তেমন চোখে পড়ে না। তবে রংপুরের পীরগঞ্জে গরুতে হালচাষের দেখা না মিললেও দেখা মিলেছে ঘোড়ায় হালচাষের।
রণক্ষেত্রের পাশাপাশি মালপত্র ও মানুষের বাহনে দীর্ঘকাল ধরে ঘোড়ার ব্যবহার থাকলেও কালের পরিক্রমায় তাও হারিয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়া ঘোড়ার মূল্যও তাই অনেক কমে গেছে। এই সুযোগে কম দামে ঘোড়া কিনে হালচাষের কাজে ব্যবহার করছেন উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ঘোনাচতরা গ্রামের কৃষক তাজেল মিয়া। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে যা পান, তা দিয়েই চলে তার সংসার।
সম্প্রতি উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ঘোনাচতরা গ্রামে পীরগঞ্জ-চতরা সড়কের পাশে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করতে দেখা যায় তাজেল মিয়াকে।
জানতে চাইলে কৃষক তাজেল মিয়া বলেন, ‘বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম অনেক কম। অল্প দামে ছয় বছর আগে ঘোড়াটি কিনেছি। এরপর থেকে নিজের জমির পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে অন্যের জমিতেও হালচাষ করছি।’
তিনি আরও জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়া বেশি হাঁটে। ফলে একই সময়ে অনেক বেশি জমি চাষ করা যায়। একদিনে দুই থেকে তিন বিঘা জমিতে হালচাষ করা যায়। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত জমি চাষ করে ১০০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। প্রতিদিন ঘোড়ার খাদ্য বাবদ খরচ হয় ১৫০-২০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চলে। চাষ মৌসুম শেষে ঘোড়া দিয়ে গাড়ি চালান তিনি।
স্থানীয় একজন জমির মালিক জানান, জমিতে হাল দিলে জমি গভীরভাবে খনন হয়। সেই সঙ্গে মই দেওয়ার সময় জমির উঁচু-নিচু ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি ধরে রাখা সহজ হয়। আর ঘোড়া শক্তিশালী হওয়ায় একদিনে অনেক বেশি জমিতে হালচাষ করা যায় বলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। দুপুর পর্যন্ত তার দুই বিঘা জমিতে হাল ও মই দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান।
চতরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের শিক্ষক ওহীদুল আলম বলেন, ‘ধীরে ধীরে ঘোড়ার হাল জনপ্রিয় হবে। সবাই এ হালের প্রতি ঝুঁকে পড়বে। তাজেল একজন পরিশ্রমী মানুষ। এলাকার চাষীদের কাছে তার ঘোড়ার হালের বেশ চাহিদা রয়েছে।’