সংগৃহীত ছবি
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের (শেবাচিম) এক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকদের প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করা হয়। শনিবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শেবাচিমের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে গত বুধবার গভীর রাতে দুই দফায় হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এসব তাকে গালাগাল, হুমকি এবং মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা, ক্যামেরাপারসন রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ফিরোজ মোস্তফা, ক্যামেরাপারসন আজিম, সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক শাকিল মাহমুদ, ক্যামেরাপারসন সুমন হাসান ও বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক মুশফিক সৌরভ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমিউনিটি মেডিকেল বিভাগের ডা. বাকি বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. পবিত্র কুমার হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা কলেজের কর্মচারী ও ছাত্রদের ডেকে এনে হামলার নির্দেশ দেন। ঘটনার পর বরিশালে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা শেবাচিম অধ্যক্ষর কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ জানান।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুপুর দেড়টার দিকে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে অধ্যক্ষর ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জানান, ক্ষমা প্রার্থনায় তারা সন্তুষ্ট নন। হামলার নেতৃত্ব দেওয়া ডা. বাকি বিল্লাহ ও ডা. পবিত্র কুমারকে শেবাচিম থেকে বদলির দাবি জানান।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা বলেন, র্যাগিংয়ের শিকার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অভিভাবকসহ শনিবার অধ্যক্ষর কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান। খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহে যান সাংবাদিকরা। তারা ঘটনার শিকার ছাত্রীর বক্তব্য নেওয়ার সময় দুই চিকিৎসকের নেতৃত্বে অতর্কিত ৪-৫ জন হামলা চালান। সাংবাদিকদের মারতে মারতে অধ্যক্ষ কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় ক্যামেরার স্ট্যান্ড।
এদিকে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকের পর অধ্যক্ষ ডা. ফয়জুল বাশার বলেন, ‘অভিযোগকারী ওই ছাত্রী মানসিক রোগী। তার মাও অসুস্থ। দুজনকে চিকিৎসার জন্য একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখানে সাংবাদিকরা ঢুকে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি তখন দায়িত্বরত শিক্ষকদের নির্দেশ দেই, সাংবাদিকরা যেন পরে এসে বক্তব্য নেন। তবে শিক্ষক ও সংবাদিকদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকরা ক্ষমা চেয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী নিলীমা জাহান জুই ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছেন তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী।