ছবি: সংগৃহীত
চলছে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট। তার প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল আবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় প্রায় ৪০০ একর জমিতে বোরো আবাদে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে ৪০০ একর জমিতে বোরোসহ অনান্য ফসল আবাদে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন একটি স্লুইসগেটের অভাবে ৪০০ একর জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার অবহিত করা হলেও আশ্বাস ছাড়া কিছুই মিলেনি। উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকিয়ে ১৫০ একর পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হয়। কিন্তু সেখানে একটি স্লুইসগেট নির্মাণ করা হলে পুরো এলাকা চাষের আওতায় আসবে।
কৃষক শফিক মিয়া জানান, আমরা সাগরনাল নালা থেকে পানি সেচ দিয়ে বোরো চাষে ব্যর্থ হই। পানির স্তর নিচে নেমে গেলে জমি নষ্ট হয়ে যায়। জমির পাশে একটি স্লুইসগেট নির্মাণ হলে পানি সংরক্ষণ সম্ভব। আর সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করা যায়।
সাগরনাল গ্রামের জলিল মিয়া বলেন, আমরা নিজেদের খরচে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছি। আশা করছি, এ মৌসুমে ১৫০ একর জমিতে বোরো আবাদ হবে।
ভুক্তভোগী কৃষক বাচ্চু ভর, ফুল মিয়া, কমলাকান্ত, দাদু কেওট ও জগদীশ ভর জানান, দিনদিন যেখানে ধান-চালের দাম বাড়ছে, সেখানে আমাদের প্রায় ৪০০ একর জমি চাষের আওতায় নেই। আমাদের জমি এভাবেই পড়ে থাকছে। যদি এই জমিগুলো চাষের আওতায় নিয়ে আসা যায় তাহলে অনেক পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে না। কোনো কোনো পরিবার এই ধান বিক্রি করে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ চালাতে পারবে। একটি স্লুইসগেট হলেই আবার সবুজের সমারোহ দেখা যাবে।
সাগরনাল ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রদীপ যাদব বলেন, স্লুইসগেটের বিষয়টি নিয়ে কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পরে আমরা নিজ উদ্যোগে একটি বাধ নির্মাণ করেছি।
জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, চাষিদের দাবি অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব রেখেছি। এখানে একটি স্লুইসগেটের প্রয়োজন রয়েছে। চাষিরা এরই মধ্যে সেখানে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে। এতে ওই এলাকায় ১৫০ একর জমিতে নতুন করে বোরো চাষ হবে।