বেনাপোলে নিহত গৃহবধূর মরদেহ দেখতে স্থানীয়দের ভিড়(ছবি বাংলাবার্তা)
যশোরের বেনাপোল সীমান্তে যৌতুকের দাবীতে ফাতেমা খাতুন(২৬) নামের এক স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামীর ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে ঘরের ঝুলন্ত অবস্থায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টায় বেনাপোল বন্দর থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে বিকালে কোনো একসময় তাকে হত্যা করে মরদেহ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে অভিযুক্তরা বাড়ি থেকে পালায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে স্বামী, শশুর স্বজনরা পলাতক রয়েছে। তবে পুলিশ বলছে ময়না তদন্ত হাতে পেলে পরে বোঝা যাবে এটি আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যা।
হত্যার শিকার নারী ফাতেমা খাতুন বেনাপোল ইউনিয়নের কাগমারী গ্রামের ট্রাক চালক সালাউদ্দীনের স্ত্রী এবং বেনাপোলের পোড়াবাড়ী নারায়ণপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিনের মেয়ে।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায়, ৩ বছর আগে সালাহউদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় ফাতেমার। সালাহউদ্দিন পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার। বিয়ের পর থেকে যৌতুক লোভী স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং ফাতেমার দেবরসহ অন্যান্য বাড়ির সদস্যরা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল। ফাতেমার গরীব অসহায় পিতা নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে ৪-৫ লাখ টাকা দিয়ে জামাই সালাহউদ্দিনকে একটি কাভার্ডভ্যান কিনে দেয়। এরপরও সে তার স্ত্রীকে প্রায়শই মারধর করতো। এ নিয়ে ফাতেমার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকবার শালিশ-বিচারের মাধ্যমে সালাহউদ্দিনকে সতর্ক করা হলেও সে থাকেনি। অবশেষে ফাতেমার উপর আবারো নির্যাতন করে।
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশের শার্শার নাভারণ সার্কেলের এ এসপি-নিশাত আল নাহিয়ান।
বেনাপোল পোর্টথানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, অপরাধীদের ধরতে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এখনও নিহতের কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।
বাংলাবার্তা/এমপি