সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা (ছবি: বাংলাবার্তা)
খুলনা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে সাধারণ ভোটাদের হুমকি ও ভয়ভীতির প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি খুলনা-৪ নির্বাচনী এলাকায় হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজী, তেরখাদা উপজেলার দ্বীন ইসালাম ও রূপসা উপজেলার মিজানুর রহমান মিজানকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
খুলনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা বলেন, এই আসনে ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মুর্শেদীর লোকজন ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তারা প্রান্তিক গ্রামের গরিব জনগোষ্ঠী, হিন্দু সম্প্রদায় ও তৃণমূলের নিরীহ আওয়ামী লীগ কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। এতে প্রধানমন্ত্রীর সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীতে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
এসএম মোর্ত্তজা রশিদী বলেন, খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী অর্থের বিনিময়ে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছেন। তিনি দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিতাড়িত করে সুবিধাভোগী সন্ত্রাসী, মাদক কারবারীদের স্থান দিয়েছেন। তারা প্রতিনিয়ত সাধারণ ভোটারদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে মহানগর যুবলীগের সভাপতির বাড়িতে নৌকার প্রার্থীর লোকজন হামলা চালিয়ে উল্লাস করেছে। তারা নারীদের প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে। এসব ঘটনায় দুই নারী সহকারী রিটানিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। ভোট যাকেই দেওয়া হোক সালাম মূর্শেদীকে জয়ী ঘোষণা করা হবে অপ্রচার চালাচ্ছে। যা নির্বাচন কমিশনের আইন ও আচরণবিধি লঙ্ঘণ করছে। হত্যা, সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারের সাথে সম্পৃক্ত কতিপয় চেয়ারম্যান-মেম্বার ত্রাসের রাজস্ব সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাই নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার ও ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।
খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক হুইপ মরহুম এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার প্রসঙ্গ এনে মোর্ত্তজা রশিদী বলেন, আমার ভাই আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের হৃদয় দিয়ে ভালো বেসেছেন। আজ সেইসব ত্যাগী নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। বিগত বছরগুলোতে হাইব্রিড সুবিধাভোগীদের দাপটে তারা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তারা এ অবস্থা থেকে নিস্তার চান।
এস এম মোর্ত্তজা রশিদী বলেন, তিনি খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছি। বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় বারবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার বারবার নির্বাচিত সহ-সভাপতি হয়েছি। নব্বইয়ের সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্রগণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে আমি কারাবরণ করেছি, মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি। আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও জনঅংশগ্রহণমূলক করতে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত তা করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রতি তিনি আহবান জানান।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রার্থী আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়, তিনি কোনো তথ্য প্রমাণ দিতে পারবেন না। এটা আমার জানা নেই। এটা আমি প্রত্যাখান করছি। আওয়ামী লীগ নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী প্রচার- প্রচারণা চালাই।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রার্থীর নির্বাচনী সমন্বয়ক জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা হুমায়ূন কবির ববি, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বাবুল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এসএম মোয়াজ্জেম রশিদী দোজা প্রমুখ।
বাংলাবার্তা/এসএ