বীর বাহাদুর উশৈসিং ও এটিএম শহীদুল ইসলাম বাবলু। ছবি : বাংলাবার্তা
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০নং আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর মধ্যেই ভোটের লড়াই অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে সপ্তমবারের মত বান্দরবান ৩০০নং আসনে জয়ী হতে রাত দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন আওয়ামীলীগও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তবে এবারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর বাহাদুর উশৈসিং নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরু করেন দেশের দক্ষিণে সর্বশেষ উপজেলা দুর্গম থানচি থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে বীরের বেশে নৌকার প্রচারণা শুরু করেন তিনি।
জানা গেছে, ১৯৯১সালে নৌকার প্রার্থী হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বীর বাহাদুর উশৈসিং। এরপর থেকে তিনি টানা ২০১৮ সালের নির্বাচনে ষষ্ঠ বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন। পরে ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান এবং ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি ফের পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এবারও সপ্তমবারের মত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে নৌকার প্রতীক বরদ্দ পেলেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান ৩০০নং সংসদীয় আসন থেকে ছয় বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং এর সঙ্গে প্রতিদ¦ন্দ্বিতা করেছেন বংলাদেশ জাতীয় পার্টির মনোনিত নাঙ্গলের প্রার্থী এটিএম শহিদুল ইসলাম বাবলু। তবে তিনি গত ২০ ডিসেম্বর বান্দরবান জেলা সদর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু করলেও পুরো বান্দরবান জেলা জুড়ে তার তেমন কোন নির্বাচনী পেস্টার লক্ষ্য করা যাচ্ছে না এবং বান্দরবান বাজার এলাকায় বিভিন্ন দোকানে দোকানে ভোট চাইতে দেখা গেলেও জেলা বা কোন উপজেলায় তাকে কোন জনসভা করাতেও দেখা যাচ্ছে না।
আরও জানা যায়, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এটিএম শহীদুল ইসলাম বাবলুকে বীর বাহাদুরের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনে করা হলেও ভোটারদের কাছে তিনি তেমন পরিচিত না। তিনি জাতীয় পার্টির লামা উপজেলার (সাংগঠনিক জেলা) এর সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও এটিএম শহীদুল ইসলাম বসবাস করেন লামা উপজেলার নুনার বিল এলাকায়। তবে এবারের নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০নং আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মধ্যেই ভোটের লড়াই হবে।
এদিকে, গত ১৫ অক্টোবর বান্দরবান ৩০০নং আসনটিতে তিন জন সংসদ সদস্য প্রার্থীর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও ব্রোমাংসার্কেলের ১৪তম সার্কেল চীফ রাজা মংশৈ প্রু চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র মংঙোয়ে প্রু মারমা। তিনি এই আসনে আওয়ামী লীগের ডামী প্রার্থী হিসাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নেন।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবানের সাতটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ৩৪টি ইউনিয়নে হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৪৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৬জন।
উল্লেখ্য, বান্দরবান সংসদীয় আসনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ১৭৬টি ভোট কেন্দ্র থাকলেও এবার ১৮৬টি ভোট কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এবারে বান্দরবান ৩০০নং আসনটিতে ভোট কেন্দ্র বেড়েছে ছয়টি। এছাড়াও জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলার দুর্গম ১২টি ভোট কেন্দ্রে বংলাদেশ সেনা বাহিনীর সহযোগিতায় হেলিকপ্টার সাপোর্টিং এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমপি