ছবি : সংগৃহীত
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের সরকারের দুস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি: ভার্নারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) কর্মসূচির আওতায় ১৮৭ জন কার্ডধারীর সঞ্চয়ের ২ লাখ ২৪ হাজার টাকার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কার্ডধারীরা।
জানা যায়, নিয়মানুযায়ী ব্যাংক এশিয়ার স্থানীয় শাখায় উপকারভোগীদের নিজ নামে করা একাউন্টে ভিজিডির টাকা থাকার কথা। কিন্তু তারা তা পাননি বলে অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগ তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাত করেছেন।
উল্লেখ্য গত ২১ ডিসেম্বর বুধবার ২০২১-২২ অর্থ বছরের ভিজিডি কর্মসূচির কার্যক্রম শেষ হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার কার্ডধারীরা তাদের সঞ্চয়ের টাকা নিতে ইউনিয়ন পরিষদে যান। এ সময় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল-আল-মামুন সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলন করতে কার্ডধারীদের ব্যাংক এশিয়ায় খোঁজ নিতে বলেন। ভুক্তভোগীরা ব্যাংক এশিয়ায় গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা কার্ডধারীদের অর্থ জমা দেওয়া হয়নি বলে জানান। পরে ভুক্তভোগীরা নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিতে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে পাঠান। কিন্তু ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েও সমাধান না পেয়ে ভুক্তভোগীরা নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগ করেন।
কাউয়াকুড়ি গ্রামের জুলেখা জানান, তিনি সঞ্চয় হিসেবে ১ হাজার টাকা মিজান চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখন এক টাকাও তার একাউন্টে নেই। গাছগড়া গ্রামের কার্ডধারী মর্জিনার স্বামী জিয়ারুল বরেন, ২০২১ সালে ভিজিডি কার্ড করে চেয়ারম্যানের কাছে বিভিন্ন সময় সঞ্চয় হিসেবে ১২শ টাকা জমা দিয়েছি। ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও মিজান চেয়ারম্যান টাকা জমা দেননি। ফলে এখন আমরা টাকা ফেরত পাচ্ছি না।
একই অভিযোগ করেন বাগিচাপুর গ্রামের ভিজিডি কার্ডধারী মনোয়ারা খাতুন। তার গচ্ছিত টাকা কোথাও জমা করা হয়নি বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
এ ব্যাপারে তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, ভিজিডির টাকা তুলে ব্যাংকে জমা দিতে ইউপি সচিবের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে তার কাছে কয়েকজনের সঞ্চয়ের টাকা রয়েছে বলেও জানান তিনি। তৎকালীন দায়িত্বে থাকা ইউপি সচিব শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা চেয়ারম্যান নিজে উত্তোলন করেছেন। কার্ডের পেছনে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর রয়েছে। আমাকে কোনো টাকা তিনি দেননি।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। ভিজিডি কার্ডধারী ভুক্তভোগীরা যদি লিখিত অভিযোগ দেন তবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।