ঘুমধুম ইউপির জনশূণ্য গ্রাম (ছবি: বাংলাবার্তা)
মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। গেল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরও একটি মর্টার শেল এসে পড়ার পরে আরও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এলাকাবাসী। এমন পরিস্থিতে সীমান্ত এলাকার আশপাশের গ্রামগুলো এখন জনশূণ্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলার ঘুমধুম তুমব্রু পার্শ্ববর্তী ওপারের মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজেপি) ক্যাম্প ঢেঁকিবুনিয়া এলাকা ছাড়াও ছোড়া গুলি ও মর্টার শেল ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের অংশে। ফলে ভয়ে ও আতঙ্কে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তের ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম গ্রামের মানুষ।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ তথ্য নিশ্চত করেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ।
তিনি জানান, উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সোমবার রাত থেকে এ পর্যন্ত সেখানে ৭টি পাড়ার ৪০টি পরিবারের শতাধিক লোক আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে গোলাগুলি, মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে পুরো সীমান্ত এলাকা। পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন থেকে শুরু করে টেকনাফের হোয়াইক্যং এবং হ্নীলা ইউনিয়ন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। বিশেষ করে তুমব্রু সীমান্তে দুজনের মৃত্যুর পর থেকে এ আতঙ্ক ছড়িয়েছে আরও দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন: সড়কে চাঁদা দাবির অভিযোগে বান্দরবানে বাস চলাচল বন্ধ
অন্যদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পলিশ, ইমিগ্রেশন পুলিশ সদস্যরা।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঘুমধুম তুমব্রুর পাশাপাশি নতুন করে উখিয়া, টেকনাফ এবং তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বিজিপি সদস্যসহ দেশটির অন্যান্য বাহিনীর ২৬৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থী ও সীমান্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাবার্তা/এসএ