অবিস্ফোরিত মর্টারশেল উদ্ধার (ছবি: বাংলাবার্তা)
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মিসহ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত সৃষ্টির পর থেকে মিয়ারমার থেকে দলে দলে পালিয়ে আসছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, মিয়ানমার সেনাবাহিনী, পুলিশ, শুল্ক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সদস্যরা।
এ পর্যন্ত ৩৩০ জনকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করে। প্রথমে তারা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন। এরপর থেকেই কক্সবাজার-মিয়ানমার সীমান্তেও আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের নয়াপড়া এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড নয়াপাড়ায় এলাকায় শিশুরা খেলাধুলা করতে গিয়ে এই অবিস্ফোরিত মর্টারশেলটি দেখতে পায়। পরে স্থানীয়রা বিজিবি ও পুলিশকে খবর দিলে পরিত্যক্ত মর্টারশেলটি উদ্ধার করে বিজিবির হেফাজতে নিয়ে যায়। স্থনীদের ধারণা মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনী পালিয়ে বাংলাদেশে বিজিবির কাছে আশ্রয় নিতে আসার সময় অর্ধেক রাস্তায় এই মর্টারশেলটি ফেলে গেছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে উখিয়ার থাইংখালী সীমান্তের ওপারের দেড় কিলোমিটার দূর থেকে গুলির বিকট শব্দ ভেসে আসছে। এতে গুলির বিকট শব্দে কাঁপছে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত এলাকা। এছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি উখিয়ার থাইংখালীর রহমতেরবিল সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসে ১৩৭ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী (বিজিপি)। তবে ঘুমধুম তুমব্রু গোলাগুলির শব্দ কিছুটা থামলেও উখিয়ার থাইংখালী, টেকনাফের হোয়ইাক্ষ্যং সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জাানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্ধারা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মর্টারশেল-গোলা আতঙ্কে জনশূন্য ৭টি গ্রাম
ঘুমধুম তুমব্রু ছাড়াও মিয়ানমার-কক্সবাজারের সীমান্ত দিয়ে গত বুধবার থেকে এ পর্যন্ত পালিয়ে এসেছে আরও ৬৩ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ বা বিজিপি সদস্য। এ নিয়ে দেশটি থেকে ৩৩০ জন নিরাপত্তারক্ষী বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিজিবির রামু জোনের সেক্টর কমান্ডার মেহেদি হাসান।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের নয়াপাড়ায় এলাকায় অবিস্ফোরিত মর্টারশেলটি উদ্ধার করে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। মর্টারশেলটি কোথায় থেকে কিভাবে আসলো সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘুমধুমের জলপাইতলী এলাকায় মিয়ানমারের ছোঁড়া মর্টারশেলের আঘাতে দুইজন বাংলাদেশী নিহত হওয়ার ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলাটিও তদন্ত করা হচ্ছে। সর্বিক পরিস্থিতি আমাদের অনুকুলে আছে। বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ কাজ করছে। ঘুমধুম এলাকার উত্তেজনার কারণে পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাবার্তা/এসএ