সংগৃহীত ছবি
টাঙ্গাইলের কৃষক আব্দুল কুদ্দুসে খানের ছোট মেয়ে পারুল। কৃষক বাবার স্বপ্ন ছিলো পারুল একদিন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। কিন্তু ২০১২ সালে পারুল মাত্র ১৫ বছর বয়সে পাশের বাড়ির নাছির উদ্দিন বাবুকে পালিয়ে বিয়ে করে। প্রায় তিন বছর পরিবার থেকে পালিয়ে ঢাকা জেলার আশুলিয়ায় সংসার পাতে বাবু এবং পারুল।
কিন্তু তিন বছর সংসার করার পর ২০১৫ সালে বাবু ও পারুলের মধ্যে শুরু হয় কলহ। পারুল তার বাবাকে ফোন করে জানায় সে আর বাবুর সংসার করতে চায় না।
তখন বাবা কুদ্দুস মেয়ে বাড়ি চলে আসতে বলেন। এরপর বন্ধু মোকাদ্দেছকে নিয়ে তিনি পারুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী তারা রাতে পাঁচবিবি এলাকায় একটি নদীর পাশে নির্জন জায়গায় নেন। সেখানে পারুলকে তার বাবা ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেন। এরপর মোছাদ্দেকের সহযোগিতায় গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
রোববার (২২ জানুয়ারি) পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, নিজের মেয়েকে এমন বর্বরভাবে খুন করেছেন বাবা নিজেই। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন।
এদিকে হত্যার পর কুদ্দুস নিজেই বাদি হয়ে পারুলকে গুম এবং হত্যা মামলা করে মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। কয়েকটি তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে কোনো কুল কিনারা না করতে পারলে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
হত্যার কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, পারুল ও নাছিরের কারণে সমাজে ছোট হয়েছেন।
বনজ জনানা, কুদ্দুস মেয়ে জামাইয়ের শাস্তি নিশ্চিত করতে সেই সব চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি দিয়ে মামলা উচ্চতর আদালতে নিয়ে যায়। সবশেষ পিবিআইয়ের কাছে তদন্ত এলে বের হয়ে আসে আসল খুনি।
পিবিআই প্রধান বলছেন, নিজেই খুন করে বছরের পর বছর ধরে মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে গেছে বাবা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সম্মান রক্ষা বা অনার কিলিংয়ের এমন ঘটনা বাংলাদেশে নজিরবিহীন।