
ফাইল ছবি
ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সিলেট। ভূ-অভ্যন্তরে সক্রিয় একাধিক ফল্টের কারণে এ অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ হিসেবে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট ও আশপাশের এলাকায় ভূমিকম্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কিন্তু, বিপদ মোকাবিলায় প্রস্তুতি কি যথেষ্ট?
সিলেটে ভূমিকম্পের ইতিহাস
ভূমিকম্পের রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সিলেট ও আশপাশের এলাকায় অতীতেও ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে। ১৮৯৭ সালে আসামে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার প্রভাব সিলেটেও পড়ে। ১৮১৮ সালে শ্রীমঙ্গলে ৭.৬ এবং ১৮২২ সালে সিলেটে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। ১৫৪৮ থেকে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত আরও সাতটি বড় ভূমিকম্পের তথ্য পাওয়া গেছে।
সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পরিসংখ্যান
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানিয়েছেন, ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১১০টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যার অধিকাংশই সিলেট অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে। ছোট ছোট ভূমিকম্প ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ইঙ্গিত বহন করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
ভবন নির্মাণে সচেতনতার অভাব
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, শহরে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মানার ক্ষেত্রে চরম উদাসীনতা রয়েছে। অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ হচ্ছে কি না, তা তদারকির সুযোগ পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন।
২০১৯ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন নগরীর ২৫টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করলেও এসব ভবনে এখনও কার্যক্রম চলছে, যা বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা তৈরি করছে।
জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিলেট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের আগাম পূর্বাভাস দেওয়ার প্রযুক্তি না থাকলেও, পরবর্তী উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য তাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পের ক্ষতি কমাতে সবার আগে বিল্ডিং কোড নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, সচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং উদ্ধার সক্ষমতা আরও বাড়ানো জরুরি। নয়তো আগামী দিনে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে সিলেট।
বাংলাবার্তা/এমএইচ