
ছবি: সংগৃহীত
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন তেইশের ছিলা-শাপলার বিল এলাকায় লাগা ভয়াবহ আগুন ৪৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন নির্বাপণের পর এখন চলছে সর্বশেষ তল্লাশি।
সকালে সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ এবং স্বেচ্ছাসেবকরা আগুনের প্রভাবিত এলাকা এবং আশপাশের জায়গাগুলোতে তল্লাশি শুরু করেছেন। তারা নিশ্চিত করছেন, কোথাও আগুনের কুণ্ডলী বা ধোয়া আছে কিনা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেলার পর বন বিভাগের ড্রোন উড়িয়ে আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি কোথাও আগুনের অস্তিত্ব না থাকে, তাহলে বন বিভাগ এই অগ্নিকাণ্ডকে সফলভাবে নির্বাপিত ঘোষণা করবে।
এ বিষয়ে খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আরিফুল হক বলেন, "রাতভর আমরা আগুন নির্বাপণের কাজ করেছি। জোয়ার আসার সঙ্গে সঙ্গে পানি ছিটানো শুরু করা হয় এবং রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করি। ভালোভাবে মনিটরিং করার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে বনের কোথাও আগুনের অস্তিত্ব নেই।"
সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর রায় জানান, "রাতভর কাজ করার পর সকাল ৯টার দিকে জোয়ার আসায় আবারও পাম্প চালানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগুন নির্বাপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে তল্লাশি চলছে, আর সবশেষ পর্যবেক্ষণ ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে করা হবে।"
এদিকে, গত শনিবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী বন টহল ফাঁড়ির টেপার বিলে আগুন লাগার খবর আসে। রোববার সকালে আগুন নিভিয়ে ফেলা হলেও পরে সুপ্ত আগুনের কুণ্ডলী ধোঁয়া খুঁজতে বন বিভাগ ড্রোন ব্যবহার করে এবং তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে আবারও আগুনের উপস্থিতি পায়। এরপর বন বিভাগ, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, ভিটিআরটি এবং সিপিজি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য ফায়ার লাইন তৈরি করে।
এ সময় পানি ছিটানোর জন্য ভোলা নদী থেকে পাম্প বসানো হলেও পানির স্তর কম থাকায় কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং গত রবিবার রাতভর চলতে থাকে আগুন নির্বাপণের কাজ। সোমবার সকাল থেকে পুনরায় আগুন নেভানোর কার্যক্রম শুরু হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী, শাপলার বিল ও কলমতেজী এলাকায় প্রায় ১০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে। তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে আগুনের বিস্তার এবং উৎস্য সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এখনও বন বিভাগ সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে, এবং যদি আগুনের কোনো নতুন উৎস পাওয়া না যায়, তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অগ্নিকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণে আনা ঘোষণা করা হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ