
ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরের একমাত্র হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। কয়েকদিন ধরে ট্রাকভর্তি আলু নিয়ে অপেক্ষা করেও সংরক্ষণের সুযোগ না পাওয়ায় অনেকেই ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন।
সংরক্ষণের অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন
শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে অবস্থিত ‘ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেড’-এর সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে শতাধিক ট্রাক। উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন। কেউ তিন দিন, কেউ পাঁচ দিন ধরেও সিরিয়ালের অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আলু সংরক্ষণে দেরি হওয়ায় ইতোমধ্যে কিছু আলু নষ্ট হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
ঈদের আগে বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত
অনেকে আলু সংরক্ষণের চিন্তায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করতে পারবেন কি না, সে নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ঠাকুরগাঁও থেকে আসা ব্যবসায়ী কাশেম মোল্লা বলেন, "গত তিন দিন ধরে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষা করছি। আলু রাখতে না পারলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।"
ট্রাকচালক সবুর শেখ বলেন, "ঈদের আগে বাড়ি ফিরে আরেকটি ট্রিপ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখানে আটকে যাওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। বসে থাকার জন্য কিছু টাকা পেয়েছি, তবে এতে ক্ষতি পোষানো সম্ভব নয়।"
হিমাগার কর্তৃপক্ষের দাবি: সংকট শিগগিরই কেটে যাবে
ফরিদপুর হিমাগারের প্রতিনিধি মো. সাফিউর রহিম বলেন, "এবার আলুর ফলন ভালো হওয়ায় একসঙ্গে প্রচুর কৃষক ও ব্যবসায়ী হিমাগারে আসছেন, ফলে এই চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমাদের হিমাগারে পর্যাপ্ত জায়গা আছে। ঈদের আগেই সব আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।"
তিনি আরও জানান, প্রতিনিয়ত আলু সংরক্ষণ করা হচ্ছে, তবে ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় আনলোডে কিছুটা সময় লাগছে।
আলু ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশঙ্কা
চাষিরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ট্রাকে রাখার ফলে কিছু আলু ইতোমধ্যেই পচতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ী রফিক হোসেন বলেন, "ক্ষেতে থাকা কাঁচা আলু ট্রাকে নিয়ে আসায় বেশি সময় অপেক্ষা করলে নষ্ট হয়ে যায়। তবে এখনো ক্ষতি বেশি হয়নি।"
এদিকে, ফরিদপুর হিমাগারটি বছরে দেড় লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণের সক্ষমতা রাখে। তবে এবার অতিরিক্ত ফলন ও ব্যবসায়ীদের চাপের কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারি পর্যায়ে হিমাগার ব্যবস্থাপনা উন্নত করা না গেলে কৃষকদের এমন ভোগান্তি প্রতি বছরই পোহাতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ