আদালতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন ড. ইউনূস (ছবি: বাংলাবার্তা)
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন শ্রম আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদিকে আরেক ধারায় তাদের ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডিত অপর ৩ আসামি হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহান।
রায় শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যে দোষ আমরা করিনি, সেই দোষের ওপরে শাস্তি পেলাম। এটা আমাদের কপালে ছিল, জাতির কপালে ছিল। আমরা সেটা গ্রহণ করলাম। আজ এই আনন্দের দিনে আঘাতটা পেলাম।
তিনি বলেন, আজকে ইংরেজি বছরের প্রথম দিন। সারা দুনিয়া এটি পালন করে বছরের নতুন দিন হিসেবে। আমরা আজকে আদালতে এসেছিলাম রায় শোনার জন্য। এসে মনটা ভরে গেল। আমার বহু বন্ধু-বান্ধব এখানে পেয়ে গেলাম। যাদের সঙ্গে আমার বহুদিন দেখা হয় নাই। এরা আজকে এসেছে, এই আনন্দের দিনে যে আমার কি রায় হয়, আমার কি অবস্থা দাঁড়াল তা দেখার জন্য। আমি কিন্তু খুব খুশি তাদের দেখে। মনটা ভরে গেল।
এ সময় ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
এর আগে রায় শুনতে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হন ড. ইউনূস। এরপর ২টা ১২ মিনিটে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়। ৮৪ পৃষ্টার রায়ের মধ্যে আদালত গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরেন।
এক পর্যায়ে আদালত বলেন, আসামিপক্ষ এক নম্বর আসামির বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশংসা সূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেন। যেখানে তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেল জয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু এই আদালত নোবেল জয়ী ড. ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে তার বিচার হচ্ছে।
পরে রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ের পর ড. ইউনূসসহ চার জনের আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিনের আদেশ দেন।
এদিকে রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আদালতের আশপাশে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
বাংলাবার্তা/এসএ/এমকে