
ছবি: সংগৃহীত
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নিয়ে করা দুর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের একাধিক সদস্য। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শেষে ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে এবং এখন মামলাগুলো বিচারপর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
দুদকের চার্জশিট অনুযায়ী, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক এলাকায় ৬০ কাঠা জমি পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ দেন। এসব বরাদ্দের মধ্যে আছে শেখ হাসিনার নিজের নামে একটি ১০ কাঠার প্লট, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার সন্তান টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিকের নামে আরও পাঁচটি ১০ কাঠার প্লট।
চার্জশিটে শেখ হাসিনাসহ পরিবারের সাত সদস্য ছাড়াও যুক্ত হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন, রাজউক ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চার্জশিটের শুনানির তারিখ ১০, ১৩ ও ১৫ এপ্রিল ধার্য করা হয়েছে। আদালত চার্জশিট আমলে নিলে মামলার বিচার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। অভিযুক্ত কেউ পলাতক থাকলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে।
এ মামলার সূত্রপাত গত বছর অক্টোবর মাসে একটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের প্লট বরাদ্দ নিয়ে দুর্নীতির খোঁজ নিতে বলা হয়। পরে ২৬ ডিসেম্বর দুদক শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছয়টি মামলা দায়ের করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মামলাগুলো শুধু প্লট বরাদ্দের দুর্নীতিই নয়, বরং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত হিসেবেও নজরে আসছে। একইসঙ্গে, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর হত্যাসহ নানা অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়েছে, যার সঙ্গে এ মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া একটি বড় রাজনৈতিক ও আইনগত মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
দুদকের আইনজীবীদের আশা, মামলাগুলোর বিচার সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনআস্থা পুনরুদ্ধারে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ