
ফাইল ছবি
বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান ব্যবহারে বাধার মুখে রয়েছে ৫৫টি সমস্যা, যার ফলে দেশে বরাদ্দকৃত বৈদেশিক অর্থের বড় একটি অংশ ব্যবহৃত হচ্ছে না। বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সম্প্রতি যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে, তাতে দেখা গেছে, বছরে বছর এই সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হচ্ছে না এবং প্রতি অর্থবছরেই একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বৈদেশিক অর্থের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৯৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩৪.২২ শতাংশ। তবে অর্থবছরের মাঝপথে এই অর্থের কিছু অংশ কেটে সংশোধিত এডিপি বরাদ্দ করা হয় ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। শেষ পর্যন্ত খরচ করা সম্ভব হয়নি ১১ হাজার ৫২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বহু প্রতিবন্ধকতার কারণে, যার মধ্যে প্রধান কারণ হলো বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এবং এলসি খুলতে না পারার কারণে প্রকল্পের মালামাল আনা সম্ভব না হওয়া।
আইএমইডির সাবেক সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, "বৈদেশিক অর্থ ব্যয়ে প্রক্রিয়া প্রায় সবসময় এক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে। অথচ এর সমাধানের জন্য কোনো কার্যকর গবেষণা বা উদ্যোগ নেয়া হয় না।" তিনি আরও যোগ করেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের পরিবর্তন ও নীতির পরিবর্তনের কারণে সমস্যাগুলোর সমাধান হয় না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বৈদেশিক অর্থ ব্যয়ে প্রধান বাধাগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহের বিলম্ব, চুক্তি কার্যকরের দেরি, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ না হওয়া, এবং স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের আপত্তির কারণে নির্মাণ কাজ স্থগিত থাকা। এর পাশাপাশি, বৈশ্বিক বাজারে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে কিছু প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত বাজেট খরচ করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ১৯টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ২১ হাজার ২২ কোটি টাকা, তবে শেষ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এই মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, শিল্প, সমাজকল্যাণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে।
এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে বৈদেশিক অর্থ ব্যবহারে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যা দেশের উন্নয়ন কাজগুলোকে বাধাগ্রস্ত করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ