
ছবি: সংগৃহীত
দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বা রেমিট্যান্সে নতুন মাইলফলক গড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এবারের ঈদুল ফিতরকে ঘিরে প্রবাসীরা দেশে যে পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন, তা দেশের ইতিহাসে এক মাসে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ রেকর্ড। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যমতে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩২৯ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা (১ ডলার = ১২২ টাকা ধরে)।
এর আগে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, যেখানে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৬৫ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০২৪–২৫) প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২৫৩ কোটি ডলার।
তবে মার্চে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শুধু গত বছরের (২০২৪) মার্চের তুলনায়ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগ এবং হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণেও বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ইতিবাচক ধারা চলমান থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও আরও স্থিতিশীল হবে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
রেমিট্যান্স প্রবাহের এমন ঐতিহাসিক উল্লম্ফন দেশের অর্থনীতির জন্য এক বড় ধরনের স্বস্তির বার্তা বহন করছে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপের মুখে থাকা সময়ে এই প্রবৃদ্ধি নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচন করছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ