
ছবি: সংগৃহীত
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ স্পষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রায় সাড়ে চার শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট লাখ ৮৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকায়। আগের প্রান্তিকে এ বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র দুই শতাংশ। উৎপাদন খাতে বড় ধরনের উন্নতি এই প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শিল্প খাতে জিডিপি আগের প্রান্তিকে যেখানে ছিল ২.৪ শতাংশ, সেখানে দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭.১ শতাংশ। কৃষিখাতেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেছে—প্রথম প্রান্তিকে যেখানে প্রবৃদ্ধি ছিল ০.৮ শতাংশ, তা দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেড়ে হয়েছে ১.৩ শতাংশ। সেবা খাতেও বৃদ্ধি পেয়েছে ৩.৮ শতাংশ, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৩৭ বেসিস পয়েন্ট বেশি।
বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপির এই প্রবৃদ্ধি সেই পূর্বাভাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, "অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে—এটা এখন স্পষ্ট। প্রথম প্রান্তিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা থেকে আমরা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছি।"
এই প্রান্তিকে রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, রেমিট্যান্সও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে ৭.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২.৮ শতাংশ বেশি।
উৎপাদন প্রবৃদ্ধির সঙ্গে রপ্তানি সরাসরি যুক্ত, অন্যদিকে রেমিট্যান্সের ফলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে। এর ফলে কৃষি, শিল্প এবং সেবাখাত একসাথে চাঙা হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই ইতিবাচক গতি অব্যাহত থাকলে আগামী প্রান্তিকগুলোতে আরও উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ