
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির কারণে উদ্বেগের মধ্যে পড়েছিল বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর অর্থনীতির জন্য এটি ছিল এক ধরনের অশনিসংকেত। তবে চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোর জন্য শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় আপাতত কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিখাত। এই সময়টিকে রপ্তানিকারকরা এক ধরনের ‘মোক্ষম প্রস্তুতির সময়’ হিসেবে দেখছেন।
গত ৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যার আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করে ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পকে একটি ব্যক্তিগত চিঠিতে ৩ মাসের জন্য শুল্ক স্থগিতের প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশে শুল্ক সুবিধা চেয়ে রাষ্ট্রদূত জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
ফলাফলে দেখা যায়, ৯ এপ্রিল চীন বাদে অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস। তিনি লেখেন, “আমরা আপনার বাণিজ্যনীতির সমর্থনে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ৯০ দিন বাংলাদেশের জন্য ‘সুযোগের জানালা’। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের শুল্কের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ নতুন বাজার তৈরি করতে পারে। বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “এই বিরতি বাংলাদেশের প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময়। চীন শুল্কের মুখে পড়ায় আমরা সুযোগ নিতে পারব।”
তবে কিছু রপ্তানিকারক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের বিক্রি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় অনেক ক্রেতা অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে। একজন বলেন, “আমার বিদেশি ক্রেতা আগের অর্ডার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।”
সার্বিকভাবে বলা যায়, এই ৯০ দিনের সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশকে কৌশলগতভাবে দরকষাকষিতে যেতে হবে এবং শুল্ক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ