
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর প্রকল্পগুলোর একটি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পে বড় অগ্রগতি আসছে চলতি এপ্রিলেই। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাপানি দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমুদ্রবন্দরের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় ছয় হাজার ১৯৭ কোটি টাকায় দুটি আধুনিক জেটি নির্মিত হবে, যা মাতারবাড়ী বন্দরের ভবিষ্যত কার্যক্রমের জন্য ভিত্তি স্থাপন করবে। চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে জাপানের পেন্টা ওশান এবং থোয়া করপোরেশন।
প্রথম পর্যায়ে নির্মিত হবে একটি ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি। নির্মাণকাজের পুরো ব্যয় বহন করবে জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি)। এই প্রকল্পে জাপানি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে, যার অধিকাংশ যন্ত্রাংশ জাপানেই প্রস্তুত হবে এবং বাংলাদেশে এনে কেবল স্থাপন করা হবে। এজন্য নির্মাণকাজে বিলম্ব হবে না বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
মাতারবাড়ী বন্দরের অবস্থান কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায়, যা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সাগরপথে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে। এখানে ১ হাজার ৩১ একর জায়গাজুড়ে তৈরি হচ্ছে বন্দরের অবকাঠামো। ইতিমধ্যে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সাড়ে ১৪ মিটার গভীরতার কৃত্রিম চ্যানেল ও ব্রেকওয়াটার তৈরি শেষ হয়েছে। এখন সেখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বড় জাহাজে কয়লা আনা হচ্ছে, তবে পূর্ণাঙ্গ বন্দর নির্মাণে নানা প্রশাসনিক ও বাস্তবায়নগত চ্যালেঞ্জ প্রকল্পকে বারবার পিছিয়ে দিয়েছে।
প্রথমে ২০২৬ সালে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, সংশোধিত পরিকল্পনায় তা ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় পর্বের কাজ শেষ হলে ২০৩০ সাল থেকে বন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আশা, এই বন্দর চালু হলে এক লাখ টন পর্যন্ত ধারণক্ষমতার বড় কার্গো জাহাজ সরাসরি বাংলাদেশে ভিড়তে পারবে। এতে করে আমদানি-রপ্তানির খরচ অনেক কমে আসবে এবং দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ