সংগৃহীত ছবি
সারাদেশে বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মূলফটকে তালা ঝুলিয়ে ফটোসেশনে করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
বুধবার (১ নভেম্বর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কসংলগ্ন তিনটি ফটকে দুজন করে ছাত্রদল কর্মী অবস্থান নেন। এ সময় দ্রুত প্রত্যেকটি গেটে তালা ঝুলিয়ে অবরোধের ব্যানার টাঙিয়ে দেন তারা। এরপর নিজেদের মোবাইলে ছবি তুলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সটকে পড়েন। পরে তালাগুলো ভেঙে যাতায়াত ব্যবস্থার সুযোগ তৈরি করে দেন ফটক সংশ্লিষ্ট থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কাজেই সকালে বের হয়েছিলাম। মীর মশাররফ হোসেন হলের ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় দেখি তালাবদ্ধ। পরে প্রধানফটকে এসে দেখি সেখানেও তালা দেয়া হয়েছে ও ছাত্রদলের ব্যানার ঝুলছে। তবে কারা তালা লাগিয়েছে আমাদের চোখে পড়েনি। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি। কারণ এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো প্রবেশ করবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্যই নিরাপত্তা অফিসকে দ্রুত সবগুলো তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি।’
তালা দেয়ার কথা স্বীকার করে ছবিতে থাকা ছাত্রদল কর্মী নাইমুল হাসান কৌশিক বলেন, ‘সরকার যতো বেশি বাধা ও হামলা-মামলা দেবে- সরকারের ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের পতন তত ভয়ংকর হবে। আমরা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই রাজপথেই মোকাবেলা করব।’
আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে হুশিয়ারি করে ছাত্রদলকর্মী নাইমুল হাসান কৌশিক আরও বলেন, ক্যাম্পাসে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ফাও খাওয়া বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিগত দিনের অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশের মানুষের এই আন্দোলনে পাশে থেকে নিজেদের কৃতকর্মের কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করবেন তারা।
ছাত্রদলের আরেক কর্মী জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের পতনের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন রয়েছে। তাই তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা জাবির প্রবেশ দুয়ারে তালা লাগিয়েছি।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরপত্তা) জেফরুল হাসান চৌধুরি সজল বলেন, ‘যেসব ফটকে তালা দেয়া হয়েছিল তার সবকটি ফটকের তালা ভেঙে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হয়েছে। যে বা যারা এই কাজ করেছে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বিশৃংখলা হয়নি। আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন।’