
ছবি: সংগৃহীত
আজ সারা দেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের মহাসমাবেশ করবে। এই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে “কারিগরি ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে এবং শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
গতকাল, ১৯ এপ্রিল, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন, যা “রাইজ ইন রেড” নামে পরিচিত ছিল। একই দিনে, আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জোবায়ের পাটোয়ারী মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে লাল কাপড় টাঙিয়ে তারা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এর আগে, ১৮ এপ্রিল, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবি নিয়ে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিলও করেছিলেন।
ছয় দফা দাবি নিয়ে গত দেড় মাস ধরে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা, যার মধ্যে আজকের মহাসমাবেশ অন্যতম। শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, তাদের শিক্ষা ও ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যায্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো:
ক্র্যাফট ইনস্ট্রাকটরের পদোন্নতি বাতিল: জুনিয়র ইনস্ট্রাকটর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাকটরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে, এবং তাদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে।
ডিপ্লোমা কোর্সে বয়সের সীমা বাতিল: ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে এবং একটি চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে।
প্রকৌশলীদের ন্যায্য নিয়োগ: উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে তাদের নিম্ন পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ করা এবং এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
পদগুলোতে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ: কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করা, এবং দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা।
স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা: “কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা” মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং “কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন” গঠন করতে হবে।
টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা: পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা এবং নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা।
আজকের এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আরও দৃঢ়ভাবে দাবি তুলবে, যা দেশের কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ