সংগৃহীত ছবি
চিত্রনায়ক ফারুক অনেক বার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এসেছেন। তিনি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন ভাষা শহীদদের প্রতি। কিন্তু আজ শহীদ মিনারে এলো তার নিথর দেহে। আজ তিনি শ্রদ্ধা জানাননি, বরং তাকেই ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানালেন সবাই।
বলা হচ্ছে সদ্য বিদায় নেওয়া কিংবদন্তি চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের কথা। সোমবার (১৫ মে) সকালে সিঙ্গাপুরে মারা গেছেন তিনি। এক দিন পর মঙ্গলবার (১৬ মে) সকালে তার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয় ফারুকের মরদেহ।
এ সময় রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়াও ফারুককে শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাট্যদল, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বিশিষ্ট রাজনীতিক, সিনেমার তারকা ছাড়াও ভিড় করেন অগণিত সাধারণ মানুষ।
4
শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক বিশ্বাসে, আচরণে, কর্মকাণ্ডে তিনি একচুলও তার আদর্শ থেকে নড়েননি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে গেছেন। আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অবিচল, পাহাড়ের মতো অটল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পুরস্কৃত করেছেন, জাতীয় সংসদে গুলশান আসনে মনোনয়ন দানের মাধ্যমে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তিনি এলাকাবাসীর জন্য কিছু করার সময় পাননি। অনেক দিন তিনি সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে কোমায় ছিলেন। কিছু দিন আগে তার গলার স্বর টেলিফোনে শুনতে পেলাম। আমরা ভেবেছি, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি ফিরে এসেছেন, মরদেহ হয়ে। তার থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। বিশেষ করে আদর্শের প্রশ্নে তিনি সংকটেও দিশেহারা হননি।’
নায়ক ফারুকের পুত্র রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেন, ‘আপনারা আমার বাবাকে শেষবারের মতো সম্মান জানাতে এসেছেন। এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকেন, তাকে মাফ করে দেবেন। দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।’
শহীদ মিনারে ফারুকের মরদেহ রাখা হয় দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত। এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে এই শ্রদ্ধাপর্ব শেষ হয়। এরপর নিথর ফারুককে নেওয়া হবে তার প্রাণের কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখানে বাদ জোহর অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানাবেন চলচ্চিত্রের মানুষেরা। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে জানাজা।
এরপর ফারুকের মরদেহ নেওয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে বাদ আসর জানাজা শেষে সন্ধ্যায় তার লাশবাহী ফ্রিজারভ্যান রওনা দেবে গাজীপুরের কালীগঞ্জের উদ্দেশ্যে। সেখানে গ্রামের বাড়িতেই সমাহিত করা হবে তাকে।