
ফাইল ছবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত তানজিন তিশার সহকারী আল আমিনের মরদেহ মৃত্যুর সাত মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রয়োজনেই মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কাশেমনগর কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
গত সোমবার (১১ মার্চ) মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজের নেতৃত্বে এবং উত্তরা পশ্চিম থানা ও শ্রীনগর থানার পুলিশের তত্ত্বাবধানে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু
গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরায় ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আল আমিন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ২০ জুলাই দাফন করা হয়।
ঘটনার চার মাস পর ডিসেম্বরে নিহতের বড় ভাই বাদল খলিফা উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে আল আমিনের বাবা আইয়ুব খলিফার সম্মতিতে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
তানজিন তিশার আবেগঘন প্রতিক্রিয়া
আল আমিনের মরদেহ উত্তোলনের খবর শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী তানজিন তিশা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন— “আল আমিন শুধু আমার সহকারী ছিল না, সে ছিল আমার ভাই। পাঁচ বছর ধরে সে আমার ছায়ার মতো ছিল। নিষ্পাপ এই ছেলেটি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছে। সাত মাস পর তার মরদেহ উত্তোলন করা মেনে নেওয়া আমার জন্য খুব কষ্টদায়ক। এতে কি কোনো লাভ হবে? শুধু ওর আত্মাটাই কষ্ট পাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে, কী উদ্দেশ্যে এমন নির্মম কাজ করা হলো, তা ভেবে আমি হতবাক।”
আন্দোলনের সময় আল আমিনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তানজিন তিশা এর আগে এক আবেগঘন পোস্ট করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন— “আল আমিন সারাদিন আমার পাশে বসে থাকত, যেন একটা বড় ছায়ার মতো। আমার কত পরিকল্পনা ছিল ওকে নিয়ে! ওকে ড্রাইভিং শেখাব, পড়াশোনায় মনোযোগী করব, পরীক্ষাটা দিতে বলব— এসব নিয়ে ওকে কত বকেছি। এখন মনে হয়, সে ছিল আমার ভাই।”
আল আমিনের মৃত্যু এবং সাত মাস পর মরদেহ উত্তোলনের ঘটনায় তার পরিবার ও কাছের মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ