
ছবি: সংগৃহীত
প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’–এর পঞ্চম সিজনের ঘোষণা দিলেন নাটকের নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি জানান, শিগগিরই শুরু হচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত পঞ্চম সিজনের কাজ। এই ঘোষণায় ভক্ত-দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে সেইসব দর্শকদের জন্য যারা গত আড়াই বছর ধরে অপেক্ষা করে ছিলেন ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’–এর নতুন অধ্যায়ের।
কাজল আরেফিন অমি তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “মানুষ গত আড়াই বছর ধরে আমার প্রতিটি পোস্টের নিচে একটাই কথা বলেছে—‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ৫ কবে আসবে?’ এই ভালোবাসা উপেক্ষা করার মতো নয়।”
নির্মাতা আরও জানান, সিজন ৫ তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ জরিপ পরিচালনা করেন। গত সপ্তাহে তিনি নিজের ফেসবুকে একটি ওপেন প্রশ্ন করেন—“ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ৫, না কি নারী চরিত্রভিত্তিক নতুন ধারাবাহিক ‘ফিমেল ৫’ আগে দেখতে চান?” এই প্রশ্নের জবাবে দুই লক্ষাধিক মন্তব্য আসে, যার ৯০ শতাংশই ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজন ৫ চেয়ে বসেন।
এই বিপুল সাড়া থেকেই নির্মাতা অনুধাবন করেন, নাট্যপ্রেমী দর্শকদের আবেগ এখনো ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ঘিরে অটুট। ফলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ৫’ আগে নির্মিত হবে এবং পরে ‘ফিমেল ৫’ নিয়ে কাজ করবেন। অমি বলেন, “ভিউয়ের জন্য নয়, আমি সব সময় দর্শকের ভালোবাসার দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করি। যেহেতু তারা আগে সিজন ৫ চেয়েছে, সেটাই আগে আসবে।”
সিজন ৫ কবে থেকে প্রচারিত হবে—এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ না জানালেও অমি জানান, “পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। শিগগিরই আমরা শুটিংয়ের তারিখ, প্রিমিয়ার সময় ও অন্যান্য বিস্তারিত আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো।”
অতীতের মতো এবারও নাটকে আগের চেনা মুখগুলো থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। আগের সিজনগুলোতে যেসব চরিত্র দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন:
-
জিয়াউল হক পলাশ (কাবিলা চরিত্রে),
-
চাষী আলম (হাবু ভাই),
-
মারজুক রাসেল (ডাক্তার চরিত্রে),
-
শরাফ আহমেদ জীবন,
-
সাবিলা নূর,
-
সানজানা সরকার ইভা,
-
ফারিয়া শাহরিন—তাঁরা প্রত্যেকেই ব্যতিক্রমী অভিনয়ে দর্শকদের মন জয় করেছেন।
নির্মাতা ইঙ্গিত দিয়েছেন, পুরোনো চরিত্রগুলোর পাশাপাশি সিজন ৫-এ আসতে পারে নতুন কিছু মুখও। গল্পে থাকবে নতুন টুইস্ট, আরও বেশি হাস্যরস আর বাস্তব জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘটনা, যা তরুণ সমাজের জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। নাটকের মূল থিম ছিল ঢাকায় থাকা কয়েকজন ব্যাচেলর যুবকের জীবন, প্রেম, সংগ্রাম ও মজার ঘটনাকে ঘিরে। নাটকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাটকটি হয়ে ওঠে দেশের অন্যতম আলোচিত ধারাবাহিক। বিশেষ করে এর সংলাপ, চরিত্র ও সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে হাস্যরসাত্মক ব্যাখ্যা তরুণ দর্শকদের কাছে এটি আলাদা গ্রহণযোগ্যতা পায়।
নতুন সিজনের ঘোষণায় ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’–এর ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। অনেকেই লিখেছেন, “এই নাটক আমাদের নস্টালজিয়া,” আবার কেউ বলছেন, “অবশেষে অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো।”
সবমিলিয়ে বলা যায়, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজন ৫ শুধুমাত্র একটি ধারাবাহিক নাটক নয়—এটি বর্তমান প্রজন্মের সামাজিক ও আবেগগত অবস্থার এক প্রতিফলন। তাই এ নাটকের প্রত্যাবর্তন শুধু বিনোদনের নয়, তরুণ সমাজের কণ্ঠস্বর পুনরায় শোনা যাওয়ার আরেকটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে।
এখন শুধু অপেক্ষা—নতুন গল্প, পুরোনো মুখ, হাসি-ঠাট্টা আর ব্যাচেলরদের জীবনের নতুন অধ্যায় দেখার।
বাংলাবার্তা/এমএইচ