
ছবি: সংগৃহীত
এবারের ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমাগুলোর মধ্যে 'জংলি' বিশেষ আলোচনায় উঠে এসেছে। প্রার্থনা ফারদিন দীঘির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভিনয় এই সিনেমায় দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে মুক্তির পর থেকেই 'জংলি' সিনেমাটি দর্শকদের ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়াচ্ছে। শুধু দেশে নয়, চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই সিনেমাটি দেশের বাইরেও মুক্তি পাচ্ছে—যা নিয়ে দীঘির মধ্যে দারুণ উচ্ছ্বাস কাজ করছে।
দীঘি জানান, “অনেক বছর পর এই ঈদে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ভালো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। দর্শকরা বিভিন্ন সিনেমার প্রতি দারুণ সাড়া দেখিয়েছেন। এতোদিন পরে এমন একটি ঈদ দেখতে পারছি, যেখানে প্রতিটি সিনেমা দর্শকদের ভালো লাগছে—এটা সত্যিই আনন্দের।” তিনি আরও যোগ করেন, “একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে এটি আমার জন্য গর্বের এবং ভালো লাগার বিষয়।”
‘জংলি’ প্রসঙ্গে দীঘি বলেন, “এটি গল্প-নির্ভর একটি সিনেমা। দর্শকরা গল্পটিকে হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি অন্য সিনেমাগুলোর কথাও বলি, চক্কর ৩০২ থ্রিলার ঘরানার হওয়ায় ভালো সাড়া পেয়েছে, বরবাদ সিনেমাটিও তার নিজস্ব ঢংয়ে ভালো করছে। যদিও ‘দাগি’ এখনো দেখা হয়নি, তবুও শুনছি সেটিও দর্শকদের আকৃষ্ট করছে। আর ‘জংলি’ও তার নিজস্ব শক্তি নিয়ে এগোচ্ছে।”
নিজের অভিনীত সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে দীঘি বলেন, “একবার পুরো টিমের সঙ্গে বসে দেখেছি সিনেমাটা। আরেকবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এছাড়া প্রতিটি হল ভিজিটের সময়, যতটুকু সময় পারতাম, ততটুকু করে দেখেছি। প্রতিবার দেখার সময়ই নতুনভাবে ভালো লেগেছে সিনেমাটি।”
‘জংলি’ দেখা দর্শকদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে দীঘি আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “প্রতিবার হলে গিয়ে দেখেছি দর্শকদের চোখে পানি। অনেকেই সিনেমা দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। কেউ কেউ তো আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছেন। বিশেষ করে, চরিত্রের প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি। দর্শকরা বলেছেন, ‘নুপুর ঠিক করেনি’, এমন মন্তব্য শুনে বুঝেছি তারা চরিত্রটির প্রতি কতটা আবেগী হয়ে পড়েছেন।”
লায়ন সিনেমা হলে 'জংলি' দেখার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে দীঘি বলেন, “শো শেষ হওয়ার পর দর্শকরা যখন আমার দিকে এগিয়ে এসে বলছিলেন, ‘নুপুর ঠিক করেনি’, তখন বুঝেছি, দর্শকরা কাহিনির ভেতরে ঢুকে পড়েছেন। তাদের ভালোবাসা এতটাই গভীর ছিল যে, সেটি আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। সেই অনুভূতি আমি সারাজীবন মনে রাখবো।”
দীঘি বলেন, “বর্তমানে দর্শকদের কাছ থেকে সিনেমা দেখার পর এতটা আবেগী ও আন্তরিক প্রতিক্রিয়া খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু ‘জংলি’-তে দর্শকদের সেই পুরনো ভালোবাসা ফিরে পেয়েছি। অপরিচিত মানুষেরা সিনেমা শেষে এসে আমাকে যে আবেগে জড়িয়ে ধরেছে, তা সত্যিই অমূল্য। তাদের দরদ, ভালোবাসা, আর একাত্মতা আমাকে অভিভূত করেছে।”
‘জংলি’-তে তার সহ-অভিনেতা সিয়াম আহমেদ সম্পর্কে দীঘি বলেন, “সিয়াম ভাই একজন অসাধারণ অভিনেতা। তার কাজের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ আছে। প্রতিটি দৃশ্যে তিনি নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিতে চেষ্টা করেন। শুধু নিজের কাজই নয়, ইউনিটের সবার খেয়ালও রাখেন। কে কখন কীভাবে কষ্ট করছে, কে না খেয়ে আছে—সেসব খোঁজও নেন। আমার শট চলার সময়ও পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন। এটি তার মানবিক দিককেও তুলে ধরে।”
নতুন কাজের প্রসঙ্গে দীঘি জানান, “বর্তমানে বেশ কিছু নতুন সিনেমা নিয়ে কথা চলছে। তবে এখনো কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। যখন সবকিছু পাকাপাকি হবে, তখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবো।”
দীঘি বলেন, ‘ভালো সিনেমা, ভালো গল্প আর দর্শকদের আন্তরিক ভালোবাসা—এই তিনটাই একজন অভিনয়শিল্পীর জীবনের বড় প্রাপ্তি। ঈদের এই সাফল্য আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে নতুন করে কাজ করতে, আরও ভালো গল্পের অংশ হতে।’
বাংলাবার্তা/এমএইচ