
ছবি: সংগৃহীত
ডায়াবেটিস রোগীদের অনেকেই মনে করেন, ফল খাওয়া মানেই রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। তবে এটি পুরোপুরি সত্য নয়। সঠিক ফল নির্বাচন এবং পরিমিত পরিমাণে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ফল খাওয়ার সময় যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখবেন
পরিমাণের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি
– প্রতিদিন ১০০-১৫০ গ্রাম ফল খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) বিবেচনায় রাখা
– গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এমন ফল খাওয়া ভালো, কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না।
ফলের রসের পরিবর্তে গোটা ফল খাওয়া উত্তম
– ফলের রস থেকে ফাইবার বাদ পড়ে যায়, যা হজম ও রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। গোটা ফল খেলে শরীরে ধীরে ধীরে শর্করা প্রবেশ করে, ফলে ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী ফল
জাম – গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ২৫। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং অ্যান্টি-ডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
পেয়ারা – গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ১২, যা অত্যন্ত কম। এতে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন সি রয়েছে, যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
আপেল – গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৩৬। এতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তে শর্করার স্তর স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
লেবু ও কমলা – এই ফলগুলোতে ভিটামিন সি ও ফাইবার রয়েছে এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ।
বেরি জাতীয় ফল (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি) – এগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার বেশি থাকে এবং শর্করার মাত্রা খুব ধীরে বাড়ায়।
যেসব ফল কম খাওয়া উচিত বা এড়িয়ে চলা ভালো
আম – উচ্চমাত্রার চিনি থাকায় দ্রুত শর্করা বাড়িয়ে দেয়।
কলা – গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি হওয়ায় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
আনারস – প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
তরমুজ – পানির পরিমাণ বেশি হলেও এতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে।
কাঁঠাল – উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট থাকায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।
ব্যক্তিগত খাদ্যতালিকা তৈরিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার নির্বাচন ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডায়েট পরিকল্পনা করাই সবচেয়ে ভালো। পরিমিত ও সঠিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
তথ্যসূত্র: আজকাল
বাংলাবার্তা/এমএইচ