
ছবি: সংগৃহীত
আমরা প্রায়ই শুনি, "একদম সুস্থ মানুষটা হঠাৎ করে মারা গেল!" অনেকেই ঘুমের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন, আবার কেউ হাঁটতে হাঁটতেই অচেতন হয়ে পড়েন। এই ‘হঠাৎ মৃত্যু’ শব্দটি আমাদের কাছে যতটা আশ্চর্যজনক মনে হয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের চোখে বিষয়টি অনেকটাই ব্যাখ্যাযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ মৃত্যুর পেছনে প্রধানত দায়ী শরীরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের হঠাৎ ব্যর্থতা। বিশেষ করে হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও শ্বাসতন্ত্র—এই তিনটি অঙ্গের বিপর্যয় হঠাৎ করে প্রাণনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
হৃদরোগ বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলো সবচেয়ে সাধারণ ও প্রধান কারণ। যখন হার্টে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, তখন হার্ট অ্যাটাক হয়। যদি দ্রুত চিকিৎসা না হয়, তা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, হার্ট অ্যাটাকের পর সিপিআর (CPR) দিলে কিছুক্ষেত্রে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব।
রেস্পিরেটরি ফেইলিউর বা শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতা হলো দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কারণ। অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলে বা কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ঠিকমতো না হলে, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট এবং মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়। বিশেষ লক্ষণ—ঠোঁট নীল হওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস ইত্যাদি দেখা দিলেই সতর্ক হতে হবে।
তৃতীয় বড় কারণ হলো পালমোনারি এম্বোলিজম, অর্থাৎ ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধা। ডা. আজাদের মতে, অনেকেই নামাজে সিজদার সময় পড়ে গিয়ে মারা যান—এই ধরনের ঘটনাগুলোর পেছনে পালমোনারি এম্বোলিজম বড় ভূমিকা রাখে।
স্ট্রোক আরেকটি বড় কারণ। এটি হার্ট অ্যাটাকের মতো হলেও মূলত মস্তিষ্কে ঘটে। রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে বা মস্তিষ্কে রক্তপাত হলে মস্তিষ্কের কোষ মারা যায়, যা হঠাৎ মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এগুলো ছাড়াও বয়স, স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ইত্যাদি বিষয়গুলো এই সমস্যাগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ