
ছবি: সংগৃহীত
রাতে জম্পেশ খেয়ে ঘুমানোর আগে হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড জ্বালা-পোড়া অনুভব করলেন। চোখ মুদলেও ঘুমানোর উপায় নেই। এমনকি কয়েক ঢোক পানি খেয়েও তেমন কোনো উপকার হচ্ছে না। এ অবস্থায় হয়তো গ্যাসট্রিকের ওষুধ খেয়েই সাময়িক মুক্তি পেলেন, তবে জানেন কি, এর পিছনে আসল কারণ কী? আসলে এটি 'অ্যাসিড রিফ্লাক্স' বা গ্যাস্ট্রো-ইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) এর লক্ষণ।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি একটি সাধারণ হজম সমস্যা, যা অনেক সময় বারবার ফিরে আসে এবং দীর্ঘমেয়াদি হয়ে ওঠে। ভারতের মহারাষ্ট্রের চিকিৎসক দত্তাত্রেয় সোলাঙ্কি জানান, অ্যাসিড রিফ্লাক্স একটি ক্রনিক সমস্যা, যা অনেক সময় হজমের গোলযোগের কারণে ঘটে। এর ফলে পাকস্থলীতে থাকা অ্যাসিড খাদ্যনালিতে উঠে আসে, যার ফলে বুকে জ্বালা-পোড়া, তিক্ত অম্ল স্বাদের জল মুখে উঠে আসা, তেতো ঢেকুর, বুকে ব্যথা ও গলায় কিছু আটকে থাকার মতো অনুভূতি তৈরি হয়।
এ ধরনের সমস্যার সমাধান খোঁজার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় দিয়েছেন দত্তাত্রেয় সোলাঙ্কি। তিনি বলেন, এই সমস্যায় পরিত্রাণ পেতে নিচের চারটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন:
১. গভীর রাতে খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন:
দত্তাত্রেয় সোলাঙ্কি বলেন, রাতের খাবার বিছানায় শোয়ার অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে খেয়ে নেওয়া উচিত। এর ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে উঠে আসতে পারে না এবং বুকের জ্বালাপোড়া এড়িয়ে চলা যায়।
২. বিছানায় শোবার সময় মাথা উঁচু করুন:
অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায়, ঘুমানোর সময় মাথাকে বালিশ দিয়ে ৬-৮ ইঞ্চি উঁচু রাখতে সাহায্য করবে। এতে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে উঠে আসার সমস্যা কমে যাবে।
৩. বাঁ দিক ফিরে ঘুমান:
বাঁ দিক ফিরে ঘুমানোও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এতে খাদ্যনালীর উপর কম চাপ পড়ে এবং অ্যাসিড ওঠার সম্ভাবনা কম হয়।
৪. অ্যান্টাসিড ব্যবহার:
বাজারে পাওয়া অ্যান্টাসিড কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে, তবে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা এই সহজ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে তাদের সমস্যা কিছুটা হলেও কমে যেতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি বা তীব্র সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ