
ছবি: সংগৃহীত
শরীরের ভিটামিনের অভাব হলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, অস্থিরতা এবং অন্যান্য সমস্যা। বিশেষ করে, যেসব নারীরা বয়স ২৫ বছর পেরিয়ে গেছেন, তাদের জন্য ভিটামিনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করা খুবই জরুরি।
বর্তমানে খাদ্যাভ্যাসের কারণে শুধু ভিটামিনের নয়, শরীরের জন্য অপরিহার্য খনিজ উপাদানগুলোরও ঘাটতি হতে শুরু করেছে। তাই অনেকেই এখন নিয়মিত মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করছেন। তবে, চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু ভিটামিন যুক্ত করা উচিত যা শরীরের চাহিদা পূরণ করবে। চলুন জেনে নেয়া যাক, কোন ভিটামিনগুলো নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. ভিটামিন ‘বি১২’
ভিটামিন ‘বি১২’ শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ভিটামিনের অভাবে মানসিক অবসাদ, শরীরের অঙ্গগুলোর কার্যক্ষমতা হ্রাস এবং ত্বক বিবর্ণ হতে পারে। নিরামিষ খাবারে এই ভিটামিনের পরিমাণ কম থাকে, তবে প্রাণিজ খাবারে এটি ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। ডিম, মাশরুম, মাংস, সামুদ্রিক মাছ, দুধ, দই ও ছানায় ভিটামিন ‘বি১২’ পাওয়া যায়।
২. ভিটামিন ‘সি’
ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে এবং ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লেবু, আমলকি, পেয়ারা, স্ট্রবেরি, ব্রকোলি, ফুলকপি, টমেটো, পালংশাক ইত্যাদি রাখতে পারলে ভিটামিন ‘সি’ এর অভাব দূর করা যাবে।
৩. ভিটামিন ‘কে’
ভিটামিন ‘কে’ হাড়কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে নারীদের জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর অভাবে হাড়ের ঘনত্ব কমে গিয়ে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। ব্রকোলি, পালংশাক, বরবটি, মুরগির মাংস এবং সয়াবিনে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
৪. ভিটামিন ‘ই’
ভিটামিন ‘ই’ ত্বক এবং চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি হাড়ের যত্ন নেয় এবং বন্ধ্যত্বের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়া, বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা রোধেও কার্যকর। পালংশাক, অ্যাভোকাডো, কাঠবাদাম, চিনেবাদাম, সূর্যমুখী বীজ ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘ই’ পাওয়া যায়।
৫. ভিটামিন ‘ডি’
ভিটামিন ‘ডি’ হাড় এবং পেশির যত্ন নেয়ার জন্য অপরিহার্য। এটি অস্টিওপোরোসিসের মতো অস্থিসংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ডিমের কুসুম, দুধ, মাছ, মাংস এবং মাশরুমে ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে। বিশেষ করে, মাশরুমের স্যুপ খেলে ভিটামিন ‘ডি’ এর চাহিদা পূর্ণ হতে পারে।
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এই ভিটামিনগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন। ২৫ বছর বয়সের পর, এই ভিটামিনগুলোর অভাব শরীরের জন্য মারাত্মক হতে পারে, তাই নিয়মিত এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ