
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত সর্বশেষ ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অ্যাক্সেস ও ব্যবহার’ বিষয়ক জরিপ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেশের ৫২ শতাংশ পরিবারের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এই হার তিন মাস আগেও ছিল ৫০.৪ শতাংশ, যা থেকে বোঝা যায়, ধীরে হলেও ইন্টারনেট ব্যবহারে অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে।
জরিপে দেখা গেছে, শহর ও গ্রামীণ এলাকাতে ইন্টারনেট ব্যবহারের হারে পার্থক্য এখনো স্পষ্ট। শহরাঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১.৬ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ ছিল ৬০.২ শতাংশ। অন্যদিকে, গ্রামীণ এলাকায় এই হার ৪৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮.২ শতাংশে। যদিও শহরের সঙ্গে তুলনায় গ্রামের ব্যবধান এখনো কমেনি, তবে গ্রামের মানুষদের মধ্যেও ধীরে ধীরে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে।
২০২৩ সালের তুলনায় সার্বিক চিত্রটি অনেকটাই ইতিবাচক। এক বছর আগে যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল ৪৪ শতাংশ পরিবারের মধ্যে, সেখানে ২০২৪ সালের শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৫২ শতাংশ। এটি স্পষ্টতই বোঝায় যে, দেশে ডিজিটাল সংযোগ বিস্তারে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
তবে শুধুমাত্র সংযোগ থাকলেই ব্যবহার হচ্ছে না, এমন বাস্তবতাও জরিপে ধরা পড়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এমন অনেক পরিবারে এখনও সক্রিয় ব্যবহারকারী নেই। জাতীয় পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ দেশের মাত্র ৪৭.২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, যদিও সেপ্টেম্বর মাসে এই হার ছিল ৪৫.৭ শতাংশ। অর্থাৎ, ইন্টারনেট সুবিধা থাকলেও সবাই তা নিয়মিত ব্যবহার করছেন না।
এছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারে বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে। ৯৮.৭ শতাংশ পরিবারে এখন মোবাইল ফোন রয়েছে এবং এর মধ্যে ৭২ শতাংশ পরিবারের কমপক্ষে একটি বা একাধিক স্মার্টফোন রয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, দেশের অধিকাংশ মানুষ এখন স্মার্টফোনভিত্তিক ডিজিটাল জীবনধারার সঙ্গে পরিচিত।
তবে প্রযুক্তি ব্যবহারে এখনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন, দেশে মাত্র ৯.২ শতাংশ পরিবারের কম্পিউটার রয়েছে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করেন। এর বিপরীতে, ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন এবং ৬৫ শতাংশ মানুষ নিজস্ব মোবাইল ফোনের মালিক।
এই চিত্র প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতার দিকগুলো স্পষ্ট করে। যদিও ইন্টারনেট সংযোগের প্রসার ঘটছে, তবে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দরকার ডিজিটাল সাক্ষরতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ