
সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের শান্তির আহ্বান কি আসলেই আন্তরিক, নাকি এটি আরেকটি রাজনৈতিক কৌশল? ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সম্প্রতি সতর্ক করেছেন যে, ওয়াশিংটন বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে পরিকল্পিত প্রচারণা চালাচ্ছে।
গত ১২ মার্চ একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে বৈঠকে খামেনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে, আলোচনা চায়, কিন্তু ইরান রাজি নয়। অথচ চুক্তি ভঙ্গ করার নজির রয়েছে তাদেরই। এমন একজন ব্যক্তির (ট্রাম্প) সঙ্গে আলোচনা কীভাবে সম্ভব, যিনি নিজেই তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন না?’
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক দ্বিচারিতা
✅ বিশ্বাসযোগ্যতা সংকট: ২০১৫ সালে সই হওয়া পরমাণু চুক্তি (JCPOA) নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা শেষে চুক্তি কার্যকর হলেও, ২০১৮ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে তা বাতিল করেন। একই ঘটনা আগেও ঘটেছে—আফগানিস্তান, ইরাক ও বসনিয়ায় মার্কিন নীতির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি রক্ষার অভাব ছিল স্পষ্ট।
✅ আলোচনার নামে চাপ: ইরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা, সামরিক হুমকি ও রাজনৈতিক উসকানি চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২২-২৩ সালে ইরানে চলমান বিক্ষোভের সময়ও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ‘শাসন পরিবর্তন’-এর ডাক দেয়, যা তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে।
✅ শান্তির মুখোশ: ট্রাম্প প্রশাসন শান্তির বার্তা দিলেও, মূলত এটি একটি কৌশল। তারা ইরানকে আলোচনায় বাধ্য করতে চায়, যেখানে সব সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকিদের সঙ্গে ইরানের আলোচনা অব্যাহত
খামেনি স্পষ্ট করেছেন যে, ইরান কখনোই আলোচনার পথ বন্ধ করেনি। ইউরোপের তিন দেশের সঙ্গে আসন্ন বৈঠক এবং চীন-রাশিয়ার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা এর প্রমাণ। তবে, ‘বিশ্বাসঘাতকতা ও শর্তভঙ্গের’ অতীত রেকর্ড থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা অর্থহীন’, বলেন তিনি।
বিশ্ব রাজনীতিতে শান্তির নামে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল কি সত্যিই সমাধান আনবে, নাকি এটি আরও একটি কূটনৈতিক চাল? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ