
সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নির্দেশে ভয়েস অব আমেরিকা (VOA), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপসহ অন্যান্য সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত গণমাধ্যমগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর পাশাপাশি তাদের কার্যালয়ে প্রবেশের অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে।
গণমাধ্যম কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা
শনিবার (১৫ মার্চ) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, ভয়েস অব আমেরিকা এবং অন্যান্য সংস্থার হাজারো কর্মীকে জানানো হয়েছে যে তারা আর অফিসে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং দ্রুত তাদের প্রেস পাস ও অন্যান্য উপকরণ ফেরত দিতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, এসব গণমাধ্যমের মাধ্যমে করদাতাদের অর্থ অপচয় হচ্ছে এবং এগুলো বন্ধ করলে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অর্থ সাশ্রয় হবে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, "করদাতাদের অর্থ আর উগ্র প্রোপাগান্ডার জন্য ব্যয় হবে না।"
গণমাধ্যমগুলোর গুরুত্ব এবং প্রতিক্রিয়া
বহির্বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রভাব বাড়াতে এবং রাশিয়া-চীনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই গণমাধ্যমগুলো দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল। ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোউইৎজ এক বিবৃতিতে বলেন,
"ভয়েস অব আমেরিকার পুনর্গঠনের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার ফলে আমাদের লক্ষ লক্ষ শ্রোতা বিশ্বস্ত সংবাদ পাওয়ার সুযোগ হারাচ্ছে।"
তিনি আরও জানান, ভয়েস অব আমেরিকা প্রতি সপ্তাহে ৪৮টি ভাষায় ৩৬ কোটি মানুষের কাছে সংবাদ পৌঁছে দিত।
রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও লিবার্টির প্রধান স্টিফেন কেইপাস এই সিদ্ধান্তকে "আমেরিকার শত্রুদের জন্য সুবিশাল উপহার" বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
"এই সিদ্ধান্তের পর ইরানের আয়াতোল্লাহ, চীনের কমিউনিস্ট নেতা এবং রাশিয়ার একনায়করা উদযাপন করবেন।"
আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া সরকারি অর্থায়ন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা প্রেসিডেন্টের একার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে না। অতীতে এই গণমাধ্যমগুলো ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সমর্থন পেয়েছে, যা ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ