
সংগৃহীত
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা (ডিএনআই) বিভাগের প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড ভারত সফরে এসেছেন। রবিবার (১৭ মার্চ) তিনি দিল্লিতে পৌঁছান এবং আজই একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন, যেখানে আলোচনার অন্যতম বিষয় হতে পারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা নিয়ে বৈঠক
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তুলসি গ্যাবার্ডের সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনকে অবহিত করতে পারে।
তুলসি গ্যাবার্ড সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন হিসেবে গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছিল। এবারও তার দিল্লি সফরে বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কোয়াড ও জি-সেভেন জোটের শীর্ষ সম্মেলন
তুলসি গ্যাবার্ড দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন, যেখানে থাকবেন কোয়াড জোটের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া) গোয়েন্দা প্রধানরা। পাশাপাশি জি-সেভেনভুক্ত ধনী দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। মূলত আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও আধুনিক ও কার্যকর করার কৌশল নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত-মার্কিন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ক্রমাগত উঠে আসছে। বিশেষ করে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের বিষয়টি একাধিকবার উত্থাপন করা হয়েছে।
- প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন বিগত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন, তখন এই ইস্যু উল্লেখ করেছিলেন।
- সর্বশেষ হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-মোদি বৈঠকেও বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়।
- ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও তার মার্কিন সমকক্ষ মার্কো রুবিও ও মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক উলজের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলেছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অবশ্য এই দাবিগুলোকে “অতিরঞ্জিত প্রচারণা” হিসেবে দেখছে এবং বলছে যে এগুলো মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
গোপনীয়তার আবরণে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু
এই সম্মেলনের আলোচ্যসূচি নিয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও ধারণা করা হচ্ছে, এটি মূলত গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের কৌশল উন্নত করা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের যৌথ পদক্ষেপ জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক অবস্থান এবং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থাকায়, এবারের বৈঠকে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ