
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’ (র) এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশকে ভারত সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই প্রতিবেদনটি পক্ষপাতদুষ্ট ও একতরফাভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, যা ভারতের বাস্তব পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে। তিনি আরও বলেন, ইউএসসিআইআরএফ বারবার ভুল তথ্য ছড়িয়ে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারত সরকার ইউএসসিআইআরএফের এই প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি ভারতীয় সমাজের বহুত্ববাদ ও ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রকৃত চিত্র বিকৃত করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ, যেখানে ১৪০ কোটি মানুষ সহাবস্থান করছে এবং সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস চর্চা করতে পারে।
সরকারের মতে, ইউএসসিআইআরএফের এই প্রতিবেদন ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর একটি প্রয়াস। তারা আরও বলেছে, এই সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে আসছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ‘র’ সহ কয়েকটি সংস্থা ধর্মীয় স্বাধীনতার গুরুতর লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এসব সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, ২০২৩ সালে নিউইয়র্কে এক শিখ নাগরিকের হত্যাচেষ্টায় ভারতের ‘র’ সংস্থার এক কর্মকর্তা ও ছয়জন কূটনীতিকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে, যা ভারত সরাসরি অস্বীকার করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রতিবেদনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে অযথা গুরুত্ব দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
ভারত সরকার স্পষ্ট করেছে যে, তারা বহুত্ববাদী ও ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে অটল রয়েছে। তারা ইউএসসিআইআরএফকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং বলেছে, এই সংস্থা তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।
ভারতীয় কূটনীতিকরা এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং মার্কিন প্রশাসনকে এমন পক্ষপাতদুষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অতীতেও ইউএসসিআইআরএফের প্রতিবেদনে ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছিল, যা ভারত প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে এবার সরাসরি ‘র’ সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করায় বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
বাংলাবার্তা/এমএইচ