
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যেই এবার মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশকে সরাসরি হুমকি দিল ইরান। যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালায়— আর সেই কাজে সহযোগিতা করে কোনো দেশ, তাহলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে কঠোর ভাষায় সতর্ক করেছে তেহরান।
রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), তুরস্ক ও বাহরাইনকে এই হুমকি দিয়েছে ইরান। এদের সবার ক্ষেত্রেই শঙ্কা, মার্কিন বাহিনী যদি আকাশসীমা বা সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি পায়, তাহলে তার জবাবে সরাসরি প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
খামেনির কড়া বার্তা ও সেনাবাহিনীকে সতর্কতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনি ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্র জানায়, যুদ্ধের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী গভীর পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ পরিকল্পনা শুরু করেছে।
ট্রাম্পের হুমকির জবাবেই ইরানের প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের হুমকি দেন। এরপরই তেহরান থেকে এই পাল্টা হুঁশিয়ারি এল। ইরান বলছে, যে কোনো আগ্রাসনের জবাব হবে দ্রুত ও ‘ধ্বংসাত্মক’।
উপসাগরীয় অঞ্চলে টানটান উত্তেজনা
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের হুমকির ফলে উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞ্চলের দেশগুলো এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। অনেক দেশেই রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও সেনা মোতায়েন। ফলে তারা এখন চাপে আছে— একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট, অন্যদিকে ইরানের পাল্টা হামলার ভয়।
বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ জ্বালানি সরবরাহ হয় এই অঞ্চল থেকে। ফলে যেকোনো সংঘাত বিশ্বব্যাপী তেল বাজার, বাণিজ্য এবং ভূরাজনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
কূটনৈতিক সংকট না সামাল দিতে পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান যদি নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও না সরে, তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ বাঁধতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের ছোট দেশগুলোর জন্য এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, অস্তিত্বের সংকটও হয়ে উঠতে পারে।
আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এ পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়ে তীব্র কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেছে। তবে কূটনীতির চেয়ে এখন মাঠে সামরিক উত্তেজনাই বেশি চোখে পড়ছে।
পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন দেখার বিষয়— যুদ্ধ, না সমঝোতা?
বাংলাবার্তা/এমএইচ