
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি ফিলিস্তিন প্রশ্নে ঐক্য দেখালেও বাস্তবতা হলো—প্রত্যেক রাষ্ট্রই তাদের স্বার্থের ভিত্তিতে অবস্থান নিয়েছে। কেউ সরাসরি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, কেউ আবার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এগিয়ে এসেছে। এই দ্বৈত মনোভাব একদিকে ফিলিস্তিনিদের হতাশ করেছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে আরব ঐক্যের চিত্রটিকে দুর্বল করেছে।
জর্ডান ফিলিস্তিনিদের প্রথম আশ্রয়দাতা দেশ হলেও, পিএলও-র সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে তাদের বহিষ্কার করে। ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেয় ৯০-এর দশকে।
লেবানন ফিলিস্তিনিদের মানবিক সমর্থন দিলেও, নাগরিক অধিকার না দিয়ে বছরের পর বছর শরণার্থী করে রেখেছে। সাবরা-শাতিলার গণহত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনার শিকার ফিলিস্তিনিরা এখনও সেখানে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটায়।
মিসর গাজায় সহিংসতা বন্ধে মধ্যস্থতা করলেও, নিরাপত্তার স্বার্থে গাজা সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। হামাসের রাজনৈতিক শিকড় মুসলিম ব্রাদারহুড হওয়ায়, প্রেসিডেন্ট সিসি তাদের ওপর কড়াকড়ি বজায় রেখেছেন।
ইরাক এক সময়ের নিরাপদ আশ্রয় হলেও, সাদ্দামের পতনের পর ফিলিস্তিনিরা সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। তাদের অনেকেই আজ আরব বিশ্বের মধ্যেও উদ্বাস্তু।
কুয়েত ১৯৯১ সালের পর লাখো ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করে। ইয়াসির আরাফাতের ইরাকপ্রীতির কারণে কুয়েত তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।
ইউএই ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন সমর্থনের রীতি ভেঙে ২০২০ সালে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। শুধু তাই নয়, সামরিক প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করেও ইসরাইলের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে।
সুদান এক সময় ইসরাইলবিরোধী ঘোষণা দিয়েও, পরে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে এই সিদ্ধান্ত নেয় খার্তুম।
এইসব পদক্ষেপে স্পষ্ট—আরব বিশ্ব আর একমুখী ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থানে নেই। ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা চিন্তা এখন তাদের অবস্থান নির্ধারণ করে দিচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ