
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির যেকোনো প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। তুরস্কের আনাতোলিয়ায় আয়োজিত ‘গাজা যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ’ বিষয়ক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান স্পষ্ট করে বলেন, “ফিলিস্তিনিদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব শুধুই অমানবিক নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক আইনেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তিনি বলেন, “গাজার মানুষ এমনিতেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিদ্যুৎ, পানি ও খাদ্যহীন একটি ভয়ংকর বাস্তবতায় বাস করছে তারা। এই অবস্থায় তাদের আবার বাস্তুচ্যুত করার যেকোনো প্রচেষ্টা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।”
ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, সৌদি আরব বিশ্বাস করে, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো একটি মৌলিক অধিকার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই সহায়তা যুদ্ধবিরতির সঙ্গে শর্তযুক্ত হতে পারে না। মানবিক সহায়তা একটি নিরপেক্ষ, অরাজনৈতিক ও জরুরি প্রক্রিয়া, যা যেকোনো শর্ত ছাড়াই নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈঠকে তিনি কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আমরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য একটি স্থায়ী, রাজনৈতিক সমাধান, যাতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক ন্যায্য ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়।”
বৈঠক শেষে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, সেখানে উল্লেখ করা হয়—
-
গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার যেকোনো উদ্যোগকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
-
UNRWA-এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করা হয়েছে, বিশেষত পশ্চিমা কিছু দেশের তহবিল বন্ধের প্রেক্ষিতে এই ঘোষণাকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে।
-
গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমকে একত্র করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
-
অবিলম্বে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো হয়, যা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী হতে হবে।
-
দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও জমি দখলের ঘটনায় কড়া নিন্দা জানানো হয়েছে এবং একে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
এই বিবৃতিতে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের অবস্থান স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও ভূখণ্ড রক্ষায় তারা যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপে নতি স্বীকার করবে না বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ