
ছবি: সংগৃহীত
চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশ সফরে যাচ্ছেন। সফরটি এমন এক সময় হচ্ছে, যখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে, আর ওয়াশিংটনের ট্যারিফ নীতির কারণে চীনের বিশ্ববাজারে অবস্থান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এই সফরে প্রথম গন্তব্য হবে ভিয়েতনাম, এরপর মালয়েশিয়া এবং সর্বশেষ কম্বোডিয়া। এই তিন দেশই বর্তমানে মার্কিন শুল্ক ব্যবস্থার শিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন আলোচনায় রয়েছে। এতে চীন এক ধরনের কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার সুযোগ দেখছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শি চিনপিংয়ের সফরটি মূলত চীনের জন্য একটি "বিকল্প বাণিজ্য বলয়" তৈরি করার উদ্যোগ। যুক্তরাষ্ট্রের একচেটিয়া বাণিজ্য কাঠামোর বাইরে গিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই এই কৌশলের মূল লক্ষ্য।
চীন এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে কেবল প্রতিবেশী অঞ্চল হিসেবেই দেখছে না; বরং এটি এক বৃহৎ বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বলয়ের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়ায় অবকাঠামো, প্রযুক্তি এবং কৃষিভিত্তিক বিনিয়োগে আগ্রহী চীন। ভিয়েতনামের সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘদিনের ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক, যার সম্প্রসারণে শি আগ্রহী।
চীনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব হ্রাস করে নতুন অর্থনৈতিক আস্থা গড়ে তোলার সময় এসেছে। তাই এই সফরে বিনিয়োগ চুক্তি, অবকাঠামো নির্মাণ, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক সংহতির ওপর জোর দেওয়া হবে।
সফরকালে চীন-আসিয়ান সম্পর্কেও নতুন মাত্রা যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, চীন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করতে চায়—বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
এই সফর প্রমাণ করছে, চীন এখন আগ্রাসী কূটনীতির জায়গা থেকে কৌশলগত বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গঠনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ