
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় বেসামরিক এলাকাগুলোর উপর ইসরাইলি হামলা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মাত্র ২৩ দিনের ব্যবধানে ১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইসরাইল ২২৪টির বেশি বার আবাসিক ভবন, শরণার্থী শিবির এবং অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। এ সময় নারীদের পাশাপাশি শিশুদের লক্ষ্য করে চালানো হামলার বিষয়টিও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “গাজা জুড়ে কোথাও কেউ নিরাপদ নয়।” তিনি জানান, ইসরাইলের চালানো সামরিক অভিযানগুলোয় শিশু ও নারীদের মৃত্যু হার ক্রমাগত বাড়ছে। বেশিরভাগ হামলাই চালানো হচ্ছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়, যেখানে সাধারণ মানুষ মাথা গোঁজার চেষ্টা করছে।
শামদাসানি আরও বলেন, “আমাদের দপ্তরের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, হতাহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু। এই প্রবণতা যুদ্ধাপরাধের আলামত বহন করে।” তিনি দেইর আল বালাহ শহরের আবু ইসা পরিবারের কথা তুলে ধরে জানান, ৬ এপ্রিল একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলি বোমার আঘাতে একটি চার বছর বয়সী শিশু, চারজন নারী এবং একজন মেয়ে নিহত হয়।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, খান ইউনিসে সামরিক আদেশ জারি করে বেসামরিকদের আল মাওয়াসি এলাকায় সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই অস্থায়ী তাঁবুগুলোতেও ইসরাইলি হামলা হয়েছে। শুধুমাত্র ১৮ মার্চ থেকে এমন অন্তত ২৩টি আক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
শামদাসানি আরও বলেন, “৩১ মার্চ ইসরাইলি বাহিনীর এক ঘোষণার মাধ্যমে রাফাহ শহরে বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করা হয়। এর মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ বাড়ানো হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।” তিনি স্পষ্ট করে জানান, “অধিকৃত অঞ্চলের জনসংখ্যাকে জোর করে স্থানান্তর করা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং এটি চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
জাতিসংঘের এই বক্তব্য গাজায় ইসরাইলি অভিযানের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও বড় পরিসরে আলোচনার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ