
ছবি: সংগৃহীত
ওমানের মধ্যস্থতায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বহুদিন পর পারমাণবিক কর্মসূচি ও আঞ্চলিক উত্তেজনা নিয়ে ‘গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ’ আলোচনা হয়েছে। রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, এই আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে সরাসরি মুখোমুখি বৈঠক হয়নি, বরং ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে মধ্যস্থতা করেন।
গত শনিবার ওমানের রাজধানী মাসকটে এই আলোচনায় অংশ নেন ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ, ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনা এসক্রোগিমা এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্বাস আরাকচি। এটি ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কর্তৃক পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংলাপ।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আলোচনার ভিত্তির কাছাকাছি পৌঁছেছি। যদি আগামী সপ্তাহে আমরা একটি প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছতে পারি, তবে সেটা বাস্তব আলোচনার দরজা খুলে দেবে।” তিনি আরও বলেন, এই আলোচনা কেবল পারমাণবিক ইস্যু নয়, বরং আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানো, বন্দী বিনিময় ও কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সম্ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত করছে।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই আলোচনায় যেসব বিষয় উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত জটিল। তবে আজকের সংলাপ পারস্পরিক উপকারের সম্ভাবনার দিক দেখিয়েছে এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বেড়ে চলা উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এই আলোচনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল একযোগে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘গভীর উদ্বেগ’ হিসেবে অভিহিত করছে।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্বঘোষিত নীতির অংশ হিসেবে, ইরান যদি পারমাণবিক সমঝোতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়, তবে সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। গত সপ্তাহেই ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “সমঝোতা না হলে আমাদের হাতে বিকল্প উপায় থাকবে না।”
তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষই নিজেদের কৌশলগত অবস্থান বোঝার চেষ্টা করছে এবং এক ধরনের ‘লিমিটেড ডিল’-এর পথে এগোনোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, এ ধরনের ক্ষুদ্র বা সীমিত চুক্তি হলে তা বৃহৎ পরিসরে আলোচনার ভিত্তি হতে পারে।
যদিও আলোচনার আনুষ্ঠানিক রূপরেখা এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে পরবর্তী শনিবার আবারও আলোচনায় বসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় একে চলমান কূটনৈতিক চেষ্টার ধারাবাহিকতা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ