
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে নজিরবিহীন ‘মার্চ ফর গাজা’। এই জনসমাবেশ শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার অনুষ্ঠিত এই বিশাল কর্মসূচি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।
মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) তাদের প্রতিবেদনে এই কর্মসূচিকে শিরোনাম করেছে “বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লাখো মানুষের বিক্ষোভ” নামে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় জমায়েত হয়ে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান তোলেন। উপস্থিত জনতা হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা বহন করেন এবং সংহতির প্রতীক হিসেবে তাদের কণ্ঠে উঠে আসে স্বাধীনতার আহ্বান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় এক লাখ মানুষ একত্রিত হন এই মানবিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে। এই বিপুল জমায়েত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তীব্র সাড়া ফেলে দেয়। অনেকেই প্ল্যাকার্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং ভারতের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার ঘোষণা করেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, এমএসএন, স্টার ট্রিবিউন, টরন্টো স্টার, সিটিভিসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের গণমাধ্যম এ কর্মসূচিকে খবরের শিরোনাম করেছে। ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের শিরোনামে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে: “বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় এক লাখ মানুষের সমাবেশ।” সংবাদে উঠে আসে এই কর্মসূচির তাৎপর্য, কারণ এটি কেবল একটি আন্তর্জাতিক সংঘাত নিয়ে প্রতিবাদ নয়, বরং একটি রাজনৈতিক-মানবিক বার্তা বহন করে।
ফার্স্টপোস্ট তাদের বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এটিকে ‘আন্তর্জাতিক সংঘাতের কারণে সৃষ্ট জাতীয় সংকট’-এর একটি উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করে। তারা উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলমান থাকলেও ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য সাধারণ মানুষের এই ঐক্যপূর্ণ অবস্থান একটি গভীর মানবিক বার্তা দেয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্দোলনকারীরা শুধু গাজার মানুষের জন্য প্রতিবাদ করেননি, বরং বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটেও বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কর্মসূচি কেবল আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণই করেনি, বরং বাংলাদেশে গণসচেতনতার একটি শক্তিশালী উদাহরণ হিসেবেও ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ