
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ইরানকে ঘিরে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন—ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ না করে, তাহলে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলা চালানো হবে।
ট্রাম্প বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের স্বপ্ন থেকেও সরে আসতে হবে। এটা শুধু অস্ত্র না রাখার বিষয় নয়, বরং এমন কোনও অবকাঠামো, গবেষণা বা সক্ষমতা তারা গড়ে তুলতে পারবে না, যা ভবিষ্যতে তাদের পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে।”
এই বক্তব্য তিনি এমন সময়ে দেন, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ওমানের মধ্যস্থতায় একাধিক দফায় পরোক্ষ আলোচনা চলছে। এসব আলোচনাকে উভয় দেশই ‘গঠনমূলক’ ও ‘ইতিবাচক’ আখ্যা দিলেও ট্রাম্প একে নিছক সময়ক্ষেপণ হিসেবে দেখছেন।
“ইরান কৌশলগতভাবে আলোচনা করছে শুধু সময় কাটাতে, তারা প্রকৃত অগ্রগতি চায় না। তারা আজ যতটা কাছাকাছি পারমাণবিক অস্ত্রের, আগে কখনও ছিল না,” বলেন ট্রাম্প।
তিনি আরও জানান, “যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। সামরিক ব্যবস্থা অবশ্যই খোলা আছে। আমরা সেটা ব্যবহার করতে দ্বিধা করব না, যদি ইরান আগুন নিয়ে খেলে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে নিজের শক্ত অবস্থান তুলে ধরছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি সম্ভাব্য কঠোর রূপান্তরের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে ট্রাম্প তার প্রথম দফার শাসনে বেরিয়ে এসেছিলেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সম্পর্ক ব্যাপকভাবে অবনতি ঘটে।
ওমানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক। এই আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং উভয় পক্ষ একটি চুক্তির সম্ভাব্য কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছে। আলোচনার পরবর্তী পর্বও ওমানে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
তবে ট্রাম্পের হুমকির পর আলোচনার পরিবেশ কতটা অনুকূল থাকবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে বিভক্ত মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এই ধরনের বক্তব্য আলোচনা স্থবির করে তুলতে পারে। আবার কেউ বলছেন, চাপের কূটনীতি ইরানকে বাধ্য করতে পারে আরও নমনীয় হতে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ