
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মালয়েশিয়ায় কেনাকাটার হিড়িক জমে উঠেছে। ঈদ উৎসবের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকায় কুয়ালালামপুরসহ অন্যান্য শহরের শপিংমলগুলো ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বাজারে এখন ঈদের কেনাকাটা নিয়ে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, এবং ক্রেতারা তাদের পছন্দের রায়া পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে শপিংমলে ভিড় করছেন।
রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক, বিশেষত রায়া পোশাক যেমন বাজু কুরং, বাজু মেলায়ু, টুডুং এবং সোংকোকের চাহিদা। এ সময় অনেকেই তাদের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য উপহার কিনছেন। কুয়ালালামপুরের শপিংমলগুলোর মধ্যে সগো শপিংমল ও জেকেল মল অত্যন্ত জনপ্রিয়, যেখানে ভিড় বেড়েছে ইফতারের পর।
শপিংমলের কর্মচারীরা জানান, প্রতিদিনই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে, বিশেষত শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা চলছে জোরেশোরে। সগো শপিংমলের বাথ অ্যান্ড বডি ওয়ার্কস আউটলেটের সহকারী ব্যবস্থাপক অ্যামি আরিফিন বলেন, "ঈদের শেষ সময়ে ক্রেতাদের ভিড় সত্যিই উৎসবের আমেজ তৈরি করেছে।"
মালয়েশিয়ার সরকার রমজানের শুরুতে 'বাজার রায়া' নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেছে, যা স্থানীয় উদ্যোক্তাদেরকে সমর্থন দিয়ে তাদের পণ্য বিক্রির সুযোগ দিয়েছে। এই উদ্যোগটির মাধ্যমে উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ পেয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা জোরদার করবে এবং ছোট উদ্যোক্তাদের বাজারে স্থান পেতে সাহায্য করবে। কুয়ালালামপুরের শ্রী পান্তাইতে 'বাজার রায়া'র উদ্বোধন করেন যোগাযোগমন্ত্রী দাতুক ফাহমি ফাদজিল, যেখানে দেশের ১,০৭৭টি স্থানে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য বিক্রি করছেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকানগুলোও ঈদের কেনাকাটার অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনের জন্য পোশাক কিনতে এই দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। অনেক প্রবাসী ঈদের পোশাক কিনতে সস্তায় পণ্য পাচ্ছেন, পাশাপাশি বেশ কিছু দোকান ঈদ উপলক্ষে আকর্ষণীয় ছাড়ও দিচ্ছে।
নেত্রকোনার প্রবাসী ইমামুল (২৬) বলেন, "এবার ঈদে পরিবার ছাড়াই মালয়েশিয়ায় থাকব, তবে পরিবারকে জামা-কাপড় পাঠিয়েছি। এখানে এসে দেশীয় পোশাক কিনে সত্যিই ভালো লাগছে।" তার মতো অনেক প্রবাসী তাদের দেশে থাকা পরিবারের জন্য উপহার পাঠিয়ে ঈদ উদযাপন করছেন।
বিক্রেতাদের মতে, আগামী দিনে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা আরও বাড়বে। তারা আশা করছেন, আগামী ঈদ বাজারে আরও বড় পরিসরে দেশীয় পোশাক আনা হবে, এবং সেসময় বিক্রি আরও বৃদ্ধি পাবে। কেনাঙ্গা শপিংমলের কাপড় ব্যবসায়ী আনোয়ার বলেন, "ঈদের শেষ সময়ে আমরা বেশ কিছু পণ্য আকর্ষণীয় ছাড় দিয়েছি, যা ক্রেতাদের আরও আকৃষ্ট করবে।"
এদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা প্রাক-ঈদ সিজনে ব্যবসার রেকর্ড ভাঙতে সহায়তা করছে। শপিংমলগুলোতে গতকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলতে থাকছে, আর ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ