মেয়র তাপস
মাসের পর মাস ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানে বিশেষ কয়েকটি এলাকা এগিয়ে থাকলেও এ পর্যায়ে এসে টনক নড়ল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)।
চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে দল বেঁধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযানে নামে আক্রান্তের দিক দিয়ে রেড জোন ঘোষিত চারটি ওয়ার্ডে। দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের দাবি, নিয়মিত কার্যক্রমেই কমে এসেছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, মশা নির্মূলের উদ্দেশ্যেই চালানো হচ্ছে চিরুনি অভিযান। অভিযানে সিঙ্গাপুরের মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) ডিএসসিসির পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড বাসাবোতে চালানো হয় অভিযান। একদিকে লতাপাতা আর আগাছার জঙ্গল।
অন্যদিকে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ডাবের খোসাসহ পরিত্যক্ত পাত্র মশার উর্বর প্রজননক্ষেত্র। পাশ দিয়ে বয়ে চলা জিরানি খালের অবস্থাও সুখকর নয়। দিনের পর দিন অপরিষ্কার- অপরিচ্ছন্ন জীবন কেটেছে এলাকাবাসীর।
ডেঙ্গু আক্রান্তের দিক থেকেও মাসের পর মাস এগিয়ে ছিল এলাকাটি। অথচ এতদিন ঢিলেঢালা কার্যক্রম চললেও ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমতে শুরু করার পর দুয়ারে হাজির পরিচ্ছন্নতাকারী দল। চালানো হয় পরিচ্ছন্নতার অভিযান।
চোখের পলকেই অপরিষ্কার এলাকার হঠাৎ পরিবর্তনে খুশি এলাকাবাসী। তবে ‘বড্ড দেরি হয়ে গেছে’, এমন আক্ষেপ অনেকের। এলাকাবাসী বলছে, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলায় তারা খুবই খুশি। এ কার্যক্রম চলমান থাকলে সবার জন্যই ভালো হয়।
তবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে এলাকাবাসীর খুব একটা সহযোগিতা মেলে না এমন অভিযোগ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। তারা বলেন, খালের মধ্যে লোকজন ময়লা আবর্জনা ফেলে। আজকে পরিষ্কার করছি। আবার এনে ফেলবে। তাতে তো সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। এজন্য স্থানীয়দের সচেতনতা জরুরি।
তবে শুধু বাসাবো এলাকাই নয়, গত এক সপ্তাহে যে ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগীর অস্তিত্ব মিলেছে তেমন চারটি ওয়ার্ডে চলে চিরুনি অভিযান। মেয়রের দাবি, নিয়মিত কার্যক্রমেই কমে এসেছে ডেঙ্গু।
তাপস বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে প্রতিদিনের কার্যক্রমটা ব্যাপক। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছি। গত বৃহস্পতিবার আমাদের রোগীর সংখ্যা ৭০- এর নিচে চলে এসেছে। সিঙ্গাপুরে যে মডেল ব্যবহার করা হয়, আমরা সেই মডেলটাই এখানে কার্যকর করছি।
বর্তমান পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সবার অংশগ্রহণ চান মেয়র।
ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে সিটি করপোরেশন নানাভাবে নানা কার্যক্রম চালিয়েছে। তবে সম্মিলিতভাবে মাঠ পর্যায়ে এত বড় তৎপরতা এর আগে দেখেনি কেউ। আর তাই বিশেষ কোনো ওয়ার্ড কিংবা বিশেষ কোনো দিন নয়, রাজধানীজুড়ে বছরব্যাপী এমন কার্যক্রম চলমান থাকুক এমনটাই প্রত্যাশা নগরবাসীর।