
ফাইল ছবি
আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকা। আজ মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বায়ুমান পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) মাত্রা অনুযায়ী, মঙ্গলবার ঢাকার অবস্থান শীর্ষ অবস্থানে চলে এসেছে। এতে বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৪৬। বিশেষজ্ঞদের মতে এই মাত্রাকে বলা হয় খুবই অস্বাস্থ্যকর।
এদিকে শুধু বায়ুদূষণের কারণে নয়, সকালের বৃষ্টির কারণেও ঢাকার আকাশ কুয়াশায় ঢেকে আছে। একইসঙ্গে আকাশও মেঘলা। একিউআই অনুযায়ী, ঢাকার পরে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, মাত্রা ২৩০। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে দিল্লি, মাত্রা ১৩৪।
বায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১০১ থেকে ২০০-এর মধ্যে মাত্রা থাকলে তা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে চিহ্নিত করা হয়। শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ‘ভালো’। ৫১ থেকে ১০০ ‘মোটামুটি’, ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত ‘সতর্কতামূলক’, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই মাত্রাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আর ৩০১-এর বেশি স্কোরকে ‘বিপজ্জনক’ বা দুর্যোগপূর্ণ বলা হয়।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, শুষ্ক মৌসুমের সময় বায়ুদূষণ বেড়ে যায় ঢাকাসহ যেকোনও শহর এলাকায়। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঢাকা শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসার মাত্রা কমই ছিল। গত কয়েক বছর প্রায় প্রতিদিন শীর্ষ অবস্থানে ছিল ঢাকা। এবার বেশ দেরিতেই শীর্ষ অবস্থানে আসছে।
এর মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মেট্রোরেলসহ অন্যান্য অনেক কন্সট্রাকশন কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। ঢাকার দূষণের বড় কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কন্সট্রাকশন।
তিনি বলেন, আজ শহরে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে আকাশ মেঘলা এবং কুয়াশা থাকায় পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় আছে। সকালে বৃষ্টি হলেও তার পরিমাণ খুব বেশি ছিল না। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে দূষণের মাত্রা কমাতে পারে না। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তাঘাটে বেশি করে পানি ছিটিয়ে দিলে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে থাকতো বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, আজ ভোরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়েছে এক পশলা বৃষ্টি। এই বৃষ্টি থেমে থেমে আজ সারা দিন ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশালে হতে পারে। এতে আকাশ প্রায় সারা দিন মেঘলা থাকতে পারে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ থাকতে পারে কম। এর প্রভাবে কমে যেতে থাকবে তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে, ৮ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকায় ৪ দশমিক ৬, টাঙ্গাইলে ৬, কিশোরগঞ্জে ৫, বগুড়ায় ৩, নেত্রকোনায় ২ এবং কুষ্টিয়ায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল আলম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রংপুরে কোনও বৃষ্টি হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশালে বৃষ্টি হতে পারে। এটি মাঝারি থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হবে। এতে আগামীকাল থেকে ঢাকার তাপমাত্রা কমে আসতে পারে। এই মাসের একেবারে শেষে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
কুয়াশার বিষয়ে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।